০৮ মে ২০২৪, বুধবার, ০৬:৩৯:৪৯ অপরাহ্ন


চবি থেকে ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০১-২০২৩
চবি থেকে ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ফাইল ফটো


সাংবাদিক হেনস্তা, আবাসিক হলে ভাঙচুর ও ছাত্রী হলে মারামারিসহ ছয় ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীসহ ১৮ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের এক কর্মীকে দুবছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রাত সোয়া ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হোসাইন ভূঁইয়া সময় সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি পর পর দুদিন মারামারির ঘটনায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় আহত হয়েছিল ১১ জন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরও আহত হয়েছিলেন। এ দুই দিনের ঘটনায় মারামারিতে জড়িত ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ ঘটনায় বহিষ্কার করা হয়, ফিন্যান্স বিভাগ স্নাতকোত্তরের আমিরুল হক চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগ স্নাতকোত্তরের ইকরামুল হক ও দর্শন বিভাগ একই শ্রেণি ও বর্ষের নয়ন দেবনাথ এবং বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহমুদুল হাসান ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মোহাম্মদ ফাহিম।

এছাড়া বেগম খালেদা জিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের চার নেত্রীর মধ্যে গত বছরের ১১ আগস্ট মারামারি হয়। এ ঘটনায় হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক তাসফিয়া জাসারাত নোলককে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

কর্মরত সাংবাদিককে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এরা হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আরশিল আজিম নিলয় এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শোয়েব মোহাম্মদ।

গত বছরের ৮ অক্টোবর আলাওল হলের কক্ষ ভাঙচুর, প্রভোস্টকে টেলিফোনে হুমকি ও কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দুই ছাত্রলীগকর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এরা হলেন, সমাজতত্ত্ব বিভাগ স্নাতকোত্তরের ছাত্র হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শহিদুল ইসলাম।

গত বছরের ২ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও দেশীয় অস্ত্র হাতে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ানো, হলের দরজা-জানালা ভাঙচুর, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি, কর্তব্যরত প্রক্টরিয়াল বডি ও সাংবাদিকদের হেনস্তা করার ঘটনায় ছয় ছাত্রলীগ কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

এরা হলেন, সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তনয় কান্তি শিকদার, অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের লাবিব সাঈদ, ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সিফাতুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাহিদুল ইসলাম ও একই বর্ষের ইতিহাস বিভাগের মো. মোবারক হোসেন।

এছাড়া গত বছরের ২৪ আগস্ট শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে কর্তৃপক্ষের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আটক হওয়া ছাত্র অধিকারের কর্মী জোবায়ের হোসেনকে দুবছরের জন্য বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হোসাইন ভূঁইয়া সময় সংবাদকে জানান, প্রতিটি ঘটনা যাচাই-বাছাই করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এমন অনেক জায়গায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে, যা আগে কখনো ঘটেনি। তাই এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে বিভিন্ন মেয়াদে এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কাজ করা উচিত। প্রশাসন সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে বলে জানান তিনি।

এ সময় তিনি আরও বলেন, এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়। কোনো পাড়া কিংবা মহল্লা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট একটি নিয়মের মধ্যেই চলে। যারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সঙ্গে জড়িত, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আসতে হবে।