২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:২৮:১৬ অপরাহ্ন


যে শহরে প্রতিদিন গড়ে ১৬ জন মানুষ খুন হয় ! সেই শহরে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী পুলিশ অফিসার ডায়না
সুমাইয়া তাবাসুম :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০১-২০২৩
যে শহরে প্রতিদিন গড়ে ১৬ জন মানুষ খুন হয় ! সেই শহরে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী পুলিশ অফিসার ডায়না যে শহরে প্রতিদিন গড়ে ১৬ জন মানুষ খুন হয় ! সেই শহরে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী পুলিশ অফিসার ডায়না


কলম্বিয়ার পাহাড় ঘেরা প্রদেশ অ্যান্টিওকুইয়া। সেই প্রদেশের নয়নাভিরাম আবুরা উপত্যকায় আছে কলম্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মেডেলিন। ছবির মত সুন্দর শহরটিকে এক সময় বলা হত চিরবসন্তের শহর। সেই মেডেলিন আজ বিশ্বের হত্যার রাজধানী । গড়ে ১৬ জন মানুষ প্রতিদিন খুন হন এই শহরে।

মেডেলিন শহরের মফঃস্বল এলাকায়, ১৯৭৫ সালে গড়ে উঠেছিল বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত ও ক্ষমতাশালী ড্রাগ পাচার চক্র ‘মেডেলিন কার্টেল’। বিশ্বের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন ‘কিং অফ কোকেন’ পাবলো এসকোবার। ১৯৯৩ সালের ২ ডিসেম্বর, পুলিশের গুলিতে এসকোবার নিহত হলেও, বন্ধ হয়নি খুনোখুনি। আজও প্রতি রাতে গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় মেডেলিন শহরের। রোজ সকালে রক্তমাখা ফুটপাথের ওপর দিয়ে, নির্বিকার মুখে চলাফেরা করেন শহরবাসীরা। 

এহেন বিপজ্জনক শহরের পিচ ঢালা রাস্তায়, ভোর থেকে গভীর রাত অবধি হন্ডা বাইক নিয়ে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ান এক অসামান্য রূপসী। শিকারি বাজের মত চারদিকে ঘুরতে থাকে যুবতীর চোখ। নজরকাড়া সুন্দরীর মাথায় থাকে ‘পোলিসিয়া’ লেখা জলপাই রঙের টুপি। চোখে রোদ চশমা। পরনে জলপাই রঙের টাইট ইউনিফর্ম। পায়ে কালো কুচকুচে ট্যাকটিক্যাল বুট। নির্মেদ কোমরে ঝোলে হাতকড়া। পিঠে মিলকর গ্রেনেড লঞ্চার। থাইয়ে বাঁধা খাপে রাখা থাকে জেরিকো এবং কোল্ট পিস্তল। শার্টের কলারের ঠিক নীচে থাকে ওয়াকিটকি। যুবতীকে দেখে, মুহূর্তের মধ্যে গলির অন্ধকারে হারিয়ে যায় পোড়খাওয়া অপরাধীরাও।

সাধারণত সারা পৃথিবীর সুন্দরী নারীরা মডেলিং কিংবা অভিনয় জগতের মাধ্যমে সাফল্যের শীর্ষে উঠতে চেষ্টা করেন। কেউ স্বপ্ন দেখেন মিস ইউনিভার্স বা মিস ওয়ার্ল্ড হওয়ার। কিন্তু সেই পথে যাওয়ার সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও, সাফল্যের জন্য ডায়না বেছে নিয়েছিলেন এক অগ্নিপথ। মেডেলিন পুলিশের এই দুর্ধর্ষ মেজরের নাম ডায়না রামিরেজ। সারা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার মতে তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী পুলিশ অফিসার।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ডায়না ভীষণ জনপ্রিয়। ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা চার লাখেরও বেশি। অনেকেই তাঁকে বলেন, গ্ল্যামারের জগতে চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ডায়না বলেন, ” রূপকে মূলধন করে জীবনে সাফল্য পেতে চাই না। পরিশ্রম, বুদ্ধি ও সাহসকে মূলধন করে জীবনে সফল হতে চাই।” আজ ডায়না সফল। তাঁর ঝুলিতে বছরের সেরা পুলিশ অফিসারের পুরস্কার। কড়া হাতে অপরাধ দমনের জন্য, তাও আবার পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক শহরে।

তাই বুঝি ডায়না মাথা উঁচু করে বলার ক্ষমতা রাখেন ,কে বলেছে সুন্দরী হলেই মডেলিং বা অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে হবে? আমি জীবনে চ্যালেঞ্জ নিতে চেয়েছিলাম। তাই আমি আজ পুলিশে। আমি প্রমাণ করতে চেয়েছি, সুন্দরীরা নিজের জীবন বিপন্ন করেও সমাজের স্বার্থে ঝুঁকি নিতে পারে। পালাতে থাকা অপরাধীকে ধাওয়া করে ধরতে পারে। পণবন্দি বালিকার মাথায় পিস্তল ধরে থাকা খুনির দুই ভ্রুর মাঝে সেকেন্ডের ভগ্নাংশে গুলি করতে পারে।”

সৌন্দর্যের পরিভাষাই পাল্টে দিয়েছেন ডায়না রামিরেজ। টানা টানা চোখের পিছনে থাকা ইস্পাত কঠিন মনকে হাতিয়ার করে, অপরাধ মুক্ত করতে চাইছেন রক্তাক্ত মেডেলিনকে। কারণ ডায়না জানেন, সৌন্দর্য আজ আছে, কাল নেই। কিন্তু রক্তাক্ত মেডেলিনকে আবার চির বসন্তের শহর করে তুলতে পারলে, তাঁকে মনে রাখবে কলম্বিয়ার ইতিহাস।