২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৩৯:০২ অপরাহ্ন


নতুন দিনের অপেক্ষা
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১২-২০২২
নতুন দিনের অপেক্ষা ফাইল ফটো


স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সফল যাত্রা দেখেছে বাংলাদেশ। আগামী বছরেই এই সেতুর নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। এবার নতুন অপেক্ষা নগরীর বুকজুড়ে মেট্রোরেল যাত্রার। আগামীকাল উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্বপ্নের এ মেট্রোযানের। মেট্রোরেল ছুটবে রাজধানীর উত্তর থেকে দক্ষিণে। আপাতত উত্তরা থেকে মেট্রোরেল চলবে রাজধানীর আগাঁরগাও পর্যন্ত। আগামী বছরের শেষভাগে মেট্রোরেল ছুটবে মতিঝিল পর্যন্ত। এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পূর্বের বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশের সুড়ঙ্গপথও চালু হয়ে যাবে নতুন বছরের প্রথম মাসেই। টানেল নির্মাণ শেষ হলে চট্টগ্রাম শহরকে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘এক নগর দুই শহর’ এর মডেলে গড়ে তোলা হবে। ফলে ২০২৩ সালে অবকাঠামো সামর্থ্যে ভিন্ন এক বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। স্বপ্নের এসব মেগা প্রকল্প নিয়ে দেশের মানুষের অনেক আশা, উৎসাহ, উদ্দীপনা। এগুলো শুধু অগ্রগতির প্রতীক হয়ে উঠবে না, এর সুফল দেশের অর্থনীতিতেও নতুন এক গতি নিয়ে আসবে।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, গত জুন মাস থেকেই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। ঢাকায় মেট্রোরেল পুরোদমে চললে, কর্ণফুলী টানেল খুলে দিলে বাংলাদেশে উন্নয়নের এক নতুন ছোঁয়া লাগবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির দিগন্ত বদলে যাবে। এর সুস্পষ্ট প্রভাব পড়বে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে। সেই সঙ্গে এগুলো বাড়িয়ে দেবে দেশের মনোবল। ‘বাংলাদেশও পারে’- এমন সাহস সঞ্চার হবে মানুষের মধ্যে। এক ভিন্ন বাংলাদেশের উদয় হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর আগেই মহামারির ধকল সামলে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।

আগে উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা ছিল, সে অবস্থায় ফিরে যাবে। আগের মতো ৮ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ২০২৩ সাল থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী টানেলও জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অংশ যোগ করবে। শামসুল আলম বলেন, ‘মেগা প্রকল্পগুলোর অর্থনৈতিক প্রাণচাঞ্চল্য যোগ হলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দুই অংকের (ডাবল ডিজিট) মাইলফলকের ঘরে নিয়ে যেতে পারব। তখন আর আমাদের পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। উন্নয়নের উল্লম্ফন অব্যাহত থাকবে। ২০৩১ সালের মধ্যেই উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো আমরা।’ অর্থনীতির গবেষক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর জনকণ্ঠকে বলেন, গত জুন থেকে চালু হয়েছে পদ্মা সেতু। এবার মেট্রোরেলও পুরোদমে চলতে শুরু করবে রাজধানীতে। কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজও শেষ হবে আগামী বছরের জানুয়ারিতে। এসব বড় প্রকল্প বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ভিন্নমাত্রা যোগ করবে। সে পরিস্থিতিতে ২০২৩ সাল থেকে ভিন্ন বাংলাদেশ পাবে দেশবাসী। আর এ সব উন্নয়নযজ্ঞকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগের ছক কষছেন উদ্যোক্তারা। সবকিছু ঠিকঠাক মতো চললে ২০২৩ সাল থেকে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে আরও মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে তিনি মনে করেন। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘সত্যিই সাহস পাচ্ছি আমরা। বড়দিন উপলক্ষে প্রচুর অর্ডার এসেছে এবার।

গত অর্থবছরের মতো এবারও ভালো প্রবৃদ্ধি হবে রপ্তানি আয়ে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর সুফল পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বাকি দুটি মেগা প্রকল্প চালু হলে সামগ্রিক প্রভাব রপ্তানি বাণিজ্যসহ অর্থনীতির সব খাতেই পড়বে। ২০২৩ সাল থেকে এক নতুন-ভিন্ন বাংলাদেশ পাব আমরা।’

অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে পদ্মা সেতু ॥ পদ্মা সেতু চালু হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ঢাকার সংযোগের মাধ্যমে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এছাড়া ট্র্যান্স-এশিয়ান রেলওয়ে ও হাইওয়েতে কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো, নেপাল, ভুটানের জন্য একটি উপ-আঞ্চলিক সংযোগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে পদ্মা সেতু।

ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ এই পুরো অঞ্চলে একেবারে কেন্দ্রে অবস্থান করছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে পদ্মা সেতু শুধু বাংলাদেশের একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প নয়, রাজনৈতিক দৃঢ়তা, সাহস ও সক্ষমতার প্রতীক। সেতু চালু হওয়ার মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় কৃষক তার খেতের সবজি, মাছ, ফুল, ফলমূল প্রতিদিন ঢাকাসহ আশপাশের মোকামে, আড়তে পাঠাতে পারছেন। ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ চালু হওয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য অনেকাংশেই কমে গেছে। কৃষক তার উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। এতে ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিনিয়োগও বেড়েছে। একই সঙ্গে বড় শিল্পেও বিনিয়োগ সুযোগ তৈরি হয়েছে। পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে দেশের নতুন অর্থনৈতিক করিডর। এই সেতুর সুবাদে জিডিপি অবদান বাড়লে স্বাভাবিকভাবে তা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করবে। দেশে আটটি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু আছে। এর মধ্যে পদ্মার ওপাড়ে শুধু মোংলা ইপিজেড। পদ্মা সেতুকে ঘিরে যশোর ও পটুয়াখালীতে আরও দুটি নতুন ইপিজেড করা হচ্ছে। এতে এ অঞ্চলে রপ্তানিমুখী খাতে নিয়োগ হবে, বাড়বে কর্মসংস্থান। সেতু বিভাগ বলেছে, বছর শেষে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়বে।

এদিকে পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্তেই ভায়াডাক্টে বসানো হয়েছে দেশের প্রথম ব্যালাস্টলেস বা পাথরবিহীন রেললাইন। মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশনে নান্দনিক ভাঙ্গা রেল জংশনসহ চারটি রেল স্টেশনের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। প্রতিদিন একের পর এক ট্র্যাক প্যানেল বসিয়ে দীর্ঘ হচ্ছে রেলপথ। রেললিংক প্রকল্পের কাজ শেষে রেল চলাচল শুরু হলে জাতীয় উৎপাদন বেড়ে যাবে আরও এক শতাংশ। পদ্মা সেতুর রেললিংক প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশন সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর নিচতলার স্টিলের অবকাঠামোর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। সেতুর ওপর রেললাইন বসানোর প্রস্তুতিমূলক সব কাজ শেষ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুতে হবে ব্যালাস্টলেস রেললাইন। সেতুর জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের রেলের ভায়াডাক্টের ওপর ব্যালাস্টলেস রেলপথের কাজ প্রায় শেষ। বাংলাদেশে ব্যালাস্টলেস রেললাইন এই প্রথম। মাওয়াপ্রান্তে ভায়াডাক্ট ২ দশমিক ৫৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এর মধ্যে ১ দশমিক ১৭ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি অংশে রেললাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। জাজিরা প্রান্তের ভায়াডাক্ট ৪ দশমিক ০৩ কিলোমিটারের কাজ শেষ। ৬ দশমিক ৬২ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ওপর ট্র্যাক প্যানেল বসিয়ে কংক্রিটিং করে তৈরি হয়েছে রেললাইন। পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পের আওতায় ১৭২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ঢাকা-যশোর রেলপথ নির্মাণ কাজের মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত।

ঢাকায় কার্বন নিঃসরণ কমে যাবে ২ লাখ ২ হাজার ৭২৬ টন ॥ পদ্মা সেতু পর বাংলাদেশের মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এবার চালু হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বুধবার উত্তরা সি ওয়ান ব্লক খেলার মাঠ থেকে মেট্রোরেল চলাচল উদ্বোধন করবেন। রাজধানীর উত্তরা (দিয়াবাড়ি) থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন করা হবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। জানতে চাইলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘মেট্রোরেল-৬ চালু হলে ৩৮ মিনিটে মতিঝিল যেতে পারবেন যাত্রীরা। সঙ্গে আরও পাঁচ মেট্রোরেল লাইন যখন চালু হবে, তখন তা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রভাব রাখবে।’ শুধু এমআরটি লাইন-৬ চালু হলে ঢাকায় কার্বন নিঃসরণ কমে যাবে ২ লাখ ২ হাজার ৭২৬ টন। এ ছাড়া প্রতিটি মেট্রো লাইনের জন্য অন্তত দুই হাজার করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে জানিয়ে সিদ্দিক বলেন, ‘এ জন্য আমরা একটি মেট্রোরেল ট্রেনিং সেন্টার চালু করতে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, মেট্রোরেলে প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। মেট্রোরেল ট্রান্সপোর্টের ছয়টি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০৩০ সালে। তখন প্রায় সাড়ে ৫০ লাখ যাত্রী এই এমআরটি দৈনিক ব্যবহার করতে পারবেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যে যানজট নিরসনের জন্য কাজ করছি, সে ক্ষেত্রে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।’

বঙ্গবন্ধু টানেল ঘিরে সাংহাইয়ের স্বপ্ন ॥ চীনের সাংহাই শহরের আদলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করছে সরকার। দেশের প্রথম এই সুড়ঙ্গপথের নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’। এই টানেলটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এর আগে ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে সঙ্গে নিয়ে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ চলছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অধীনে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পটির মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে বাংলাদেশে সরকারের অর্থ সহায়তা থাকবে তিন হাজার ৯৬৭ কোটি টাকার মতো। বাকি টাকা আসবে চীনের কাছ থেকে। এই প্রকল্পটিতে চীন পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকার বেশি অর্থ সহায়তা দিচ্ছে।

সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, কর্ণফুলী টানেলটি মূলত আনোয়ারা উপজেলাকে চট্টগ্রামের মূল শহরের সঙ্গে যুক্ত করবে। এই প্রকল্পের অধীনে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ৪ লেনের সড়ক টানেল নির্মাণ করা হবে। মূল টানেলে থাকবে দুটি টিউব। যার দৈর্ঘ্য হবে ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার। এছাড়া টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি সংযোগ সড়ক থাকবে। সঙ্গে থাকবে ৭শ’ ২৭ মিটার দীর্ঘ একটি ওভার ব্রিজ।

জানা যায়, ইতোমধ্যে এই টানেলের নির্মাণ কাজ ৯০ শতাংশের মতো সম্পন্ন হয়েছে।

সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম শহরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ও আধুনিকায়ন করাই এই টানেলটি নির্মাণের অন্যতম কারণ। টানেলটি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের সঙ্গে নতুন একটি সড়ক যোগাযোগ চালু হবে। ফলে ঢাকা থেকে কক্সবাজার কিংবা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার দূরত্ব কমে আসবে। বাঁচবে খরচ এবং সময়ও। ভবিষ্যতে এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপন করবে এই টানেল। সেই সঙ্গে কর্ণফুলী নদীর পূর্বদিকে শহরাঞ্চলকে যুক্ত করে সেখানে উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এটি। ওই এলাকায় যে শিল্প এলাকা গড়ে তোলার প্রস্তাব রয়েছে সেটির কাজও শুরু হবে জোরেশোরে। অন্যদিকে পশ্চিম দিকে চট্টগ্রাম মূল শহরের সঙ্গে সাগর ও বিমানবন্দরেরও দূরত্ব কমে আসবে।

কম খরচে ভ্রমণ আরও সহজ হবে। আর দুই বন্দর থেকেই মাল পরিবহন সহজ হবে। এছাড়া টানেলটি নির্মাণের পর চট্টগ্রাম বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। যার কারণে গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণ কাজও এগিয়ে যাবে। সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, টানেল নির্মাণ শেষ হলে চট্টগ্রাম শহরকে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ বা ‘এক নগর দুই শহর’ এর মডেলে গড়ে তোলা হবে। কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক হারুনুর রশীদ জানান, আগামী বছর জানুয়ারির শেষ নাগাদ পুরো টানেলের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন তারা। আর পুরো কাজ শেষ হলে তখন টানেলটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। টানেলটি দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই টানেল চালু হলে সেটি দেশের জিডিপিতে বার্ষিক শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে।