০২ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৪:৪০:১৪ পূর্বাহ্ন


আরেক স্বপ্ন হাতের নাগালে
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১২-২০২২
আরেক স্বপ্ন হাতের নাগালে ফাইল ফটো


দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে রাজধানীবাসীর। দেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধনের আর মাত্র চার দিন বাকি। ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরদিন থেকে সীমিত যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে মেট্রোরেল। পরদিন থেকেই সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কেটে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারবেন। উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে স্টেশনকেন্দ্রিক সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ নিউজ থেকে জানা গেছে, মেট্রো স্টেশনসহ ট্রেনে ওঠার সিঁড়ির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়ার মেট্রোরেল অংশে মেট্রোরেলের ওপরের অংশের কাজ শেষ করে তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। নিচে সড়কের ভাঙা অংশগুলো বালু ও ইট দিয়ে সমান করা হয়েছে। কিছু অংশে নতুন করে কার্পেটিং করা হয়েছে। ফুটপাতগুলোতে বসানো হচ্ছে টাইলস। তবে আগারগাঁও স্টেশন পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত। সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে নির্মাণকাজের জিনিসপত্র। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হওয়ায় মেট্রোরেলের মালামাল সরানো হয়েছে। ফলে রাস্তা আগের মতোই প্রশস্ততা ফিরে পাচ্ছে। মেট্রোরেলের নিচ দিয়ে মিরপুর থেকে উত্তরার বিকল্প রুটের রাস্তাও তৈরি হচ্ছে।

মেট্রোরেলে যাতায়াত শেষে সড়কপথে গন্তব্যে যেতে যাত্রীদের জন্য ৫০টি দ্বিতল বাস থাকবে। উদ্বোধনের দিন থেকে চলাচল করবে এসব বাস। যাত্রীরা ভাড়া দিয়ে বাসে নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারবেন। বিআরটিসি  সূত্র জানায়, এরই মধ্যে গত বুধবার দিয়াবাড়ী থেকে হাউস বিল্ডিং এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল রুটে পরীক্ষামূলক ১৫টি বাস চলেছে। মেট্রোরেল স্টেশনে নেমে যাত্রীরা যাতে পরিবহন সমস্যায় না পড়েন এ জন্য বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এই পথে ৯টি স্টেশন রয়েছে। সেগুলো হলো- উত্তরা (উত্তর) দিয়াবাড়ী, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া এবং আগারগাঁও। এ ছাড়া আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে সাতটি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেস ক্লাব ও মতিঝিল। মতিঝিল থেকে ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার কমলাপুর অংশের স্টেশনের সংখ্যা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে মেট্রোরেল বা এমআরটি-৬ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা-জাইকার সঙ্গে এ প্রকল্পের ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এ প্রকল্পটি প্রথমে ছিল উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। পরে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার অংশ যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমান মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার। শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। পরে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর পর ব্যয় বেড়েছে আরও প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে প্রকল্পের ব্যয় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকা ঋণ সহায়তা হিসেবে দিয়েছে ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা। সরকার খরচ করছে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। মেট্রোরেলের স্টেশনে লিফট, এস্কেলেটর ও সিঁড়ি দিয়ে ওঠা যাবে। তিনতলা স্টেশন ভবনের দ্বিতীয় তলায় টিকিট কাউন্টার এবং অফিস ব্যবস্থাপনা। তিন তলায় থাকবে রেললাইন ও প্ল্যাটফরম। দুর্ঘটনা এড়াতে রেললাইনের পাশে বেড়া থাকবে। স্টেশনে ট্রেন থামার পর বেড়া ও ট্রেনের দরজা একসঙ্গে খুলে যাবে। আর নির্দিষ্ট সময় পর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।