০২ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৪:২২:২৮ পূর্বাহ্ন


রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে নতুন আশা
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-১২-২০২২
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে নতুন আশা রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে নতুন আশা


জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো মিয়ানমার পরিস্থিতিবিষয়ক একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। মিয়ানমারের বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জরুরি অবস্থা, বন্দীমুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানকে এতে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
এর আগে ভেটো ক্ষমতার অধিকারী চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার, বিশেষ করে রোহিঙ্গাবিষয়ক কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে প্রস্তাবটি ১২-০ ভোটে পাস হয়। প্রস্তাবের বিপক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের কোনো সদস্য ভোট বা ভেটো দেয়নি। তবে চীন, রাশিয়া ও ভারত ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল। প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ব্রিটেন।
ভোটাভুটি শেষে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফ্রান্স, মেক্সিকো, গ্যাবন এবং নরওয়ে প্রস্তাবে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করাকে স্বাগত জানায়। তারা এই সঙ্কট সুরাহায় নিরাপত্তা পরিষদের জোরালো ভূমিকা দাবি করে। প্রস্তাবে রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে তাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমে প্রত্যাবাসনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলবে। এ ছাড়া এ সমস্যা সমাধানে ২০২১ সালে আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর গৃহীত পাঁচ দফা ঐকমত্যের দ্রুত ও পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নে জাতিসঙ্ঘের কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হবে কি না সে বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব এবং মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূতকে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। প্রস্তাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়, নিরাপত্তা ও মানবিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করা হয়।
জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে জানানো হয়, নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবটি রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের প্রতি বিশ্বসংস্থার সবচেয়ে ক্ষমতাধর অঙ্গটির শক্তিশালী সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ। রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কটসহ অন্যান্য বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে গৃহীত প্রস্তাবটি রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রতি বিশ্বসম্প্রদায়ের দৃষ্টি আরো সুসংহত করতে সহায়ক হবে। এতে বলা হয়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালে আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ ছাড়া আগে থেকেই প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেন। তবে তিনি শুরু থেকেই তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য বিশ্বনেতৃবৃন্দের কাছে জোরালো দাবি উত্থাপন করে আসছেন। এই প্রস্তাবনা অনুমোদিত হওয়ার ফলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদের নিয়মিত কার্যকলাপের অংশ হয়ে গেল। একই সাথে এটি রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে আরো শক্তিশালী ও ত্বরান্বিত করবে।