অরুণাচল দখলের মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিন। তাওয়াংয়ে সংঘর্ষের পরে দু’দেশের শান্তি আলোচনাতেও সমস্যা মেটেনি। চিনা বাহিনী সেনা পিছনোর কথা বললেও আদলে দেখা যাচ্ছে, লাগোয়া তিব্বতি বিমানঘাঁটিতে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে চিনের বোমারু বিমান। অরুণাচল সীমান্ত ঘেঁষে ওঠানামা করছে চিনের যুদ্ধবিমান। আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ না উঠলেও চিনা ড্রোনকে নজরদারি চালাতে দেখা গেছে।
ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়ের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) গত ৯ ডিসেম্বরের রাতের সংঘর্ষের পরে চিন অধিকৃত তিব্বতে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র যুদ্ধবিমান এবং ড্রোনের আনাগোনা বেড়ে গেছে হঠাৎ করে।
চিনের বাংদা বিমান ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি ড্রোন মোতায়েন করেছে বেজিং। অরুণাচল সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে এই বাংদা বিমান ঘাঁটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন আকসাই চিন এলাকায় সহজেই তিব্বতের এই অংশ থেকে নজর রাখা যায়। সেই কৌশলগত অবস্থান ব্যবহার করেই ড্রোন মোতায়েন করেছে চিন।
ম্যাক্সারের তোলা উপগ্রহচিত্রে দেখা গেছে, তিব্বতের চাংডু বাংদা বিমানঘাঁটিতে সার বেঁধে রয়েছে এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান, সুখোই এসইউ-৩৫, অ্যাওয়াক্স, গুপ্তচর ড্রোন। লাল ফৌজের আধুনিক ‘ডব্লিউজেড-৭’ (সোয়ারিং ড্রাগন) ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছে ওই ঘাঁটিতে। ম্যাক্সারের তোলা ১৪টি ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাওয়াংয়ের সংঘর্ষের পর চাংডু বিমানঘাঁটিতে ফাইটার জেট, ড্রোন মোতায়েন করছে চিন।
পূর্ব লাদাখে ভারতের শক্তির সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে অরুণাচলে নতুন করে সামরিক বিন্যাস করে ভারতের বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ ছোড়ারই চেষ্টা করছে চিন, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত এমনটাই। সেই ১৯৬২ সালে ইন্দো-চিন যুদ্ধ বাধে এই অরুণাচলকে কেন্দ্র করেই। চিন একে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলেই মনে করে। পূর্ব লাদাখের মতো অরুণাচলেও আধিপত্য বিস্তার করতে মরিয়া তারা। জুন মাসে গালওয়ানে দুই দেশের সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষের পরে অরুণাচল নিয়েও শঙ্কিত হয় ভারতের বাহিনী। তবে সেনা সূত্র জানাচ্ছে, ওই এলাকাতেও নিয়মিত সেনার বিন্যাস বদলানো হয়। ভারত আগে থেকেই সব প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছে। অরুণাচলে ভারতের আকাশসীমায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক দফা নজরাদারি চালিয়েছে ভারতীয় বায়ু সেনার সুখোই ৩০এমকে। কাজেই চিনের কৌশল খুব একটা কাজে আসবে না।