পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলোর কারাদণ্ডের মেয়াদ বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) ১৮ মাস বাড়িয়েছে দেশটির আদালত। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে এমন রায়ে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দেবে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে কাস্তিলোকে গ্রেফতারের পর থেকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। খবর আল জাজিরার।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, এ রায়ের পর শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) বিক্ষোভকারীরা আবার পেরুর রাস্তায় নেমে আসেন। তারা গ্রেফতারকৃত নেতার মুক্তির দাবি জানান। সে সঙ্গে নতুন করে নির্বাচন এবং প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের অপসারণের দাবি জানান।
এ ঘোষণায় নতুনভাবে পেরুতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিক্ষোভে নেমেছেন কাস্তিলোর পরিবারও। তার মুক্তির দাবিতে পার্লামেন্ট-কারাগারের সামনে চলছে ধর্মঘট।
এর আগে গত বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বলুয়ার্তের প্রশাসন। দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও অস্থিরতা দমনে আন্দোলন ও সমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের বিচার বিভাগীয় প্যানেলের রায়ে বলা হয়েছে, কাস্তিলো প্রাথমিকভাবে সাত দিনের জন্য জেলে ছিলেন। তবে প্রসিকিউটররা তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। এ জন্য তার কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
তবে কাস্তিলো তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, রাজধানী লিমার কাছে অন্যায়ভাবে তাকে আটক করেছে পুলিশ। অভিশংসন প্রক্রিয়াকে অভ্যুত্থান হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট কাস্তিলো অপসারণ হওয়ায় পেরুর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হন দিনা বলুয়ার্তে। কাস্তিলোকে বিদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং এমপিরা তাকে অভিশংসন করে। অভিশংসন ভোটটি ১৩০-১০১ ভোটের ব্যবধানে পাস হয়।
দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তে, চলমান বিক্ষোভের মধ্যে দেশের জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট কাস্তিলোর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দেশের গ্রামীণ অংশে বিক্ষোভ ব্যাপক ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন প্রেসিডেন্ট দেশব্যাপী ৩০ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
এর আগে, দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন পেরুর অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে। এ সময় দেশজুড়ে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। ৬০ বছর বয়সী দিনা পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। তিনি ২০২৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। তবে তার নতুন প্রস্তাব অনুসারে ২০২৪ সালেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।