নারী অধিকার সংস্থা থেকে ইরানকে বহিষ্কার করেছে জাতিসংঘ। দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভে ইরান সরকার দমন-পীড়ন অব্যাহত রাখার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ভোটাভুটির পর দেশটিকে ওই সংস্থা থেকে সরিয়ে দেয় জাতিসংঘ।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৪ সদস্যের জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল (ECOSOC) বুধবার নারীর অধিকারের পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেন থেকে ইরানকে বহিষ্কারের জন্য মার্কিন-খসড়া প্রস্তাব গ্রহণের পক্ষে ভোট দেয়।
ইরানকে বহিষ্কারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র খসড়া প্রস্তাব আনার পর এর ওপর ভোটাভুটি হয় এবং তাতে ২৯-৮ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। তবে ১৬ সদস্য ভোট প্রদান থেকে বিরত ছিল। ভোটাভুটির মাধ্যমে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত ২০২২ সাল থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত সংস্থাটির বর্তমান মেয়াদের বাকি অংশের জন্য প্রযোজ্য।
এদিকে ভোটের পর জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড টুইটারে বলেছেন, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো নারীর মর্যাদা সংক্রান্ত কমিশন থেকে ইরানকে অপসারণে ভোট দিয়েছে। ইরানি নারী ও কর্মীরা আমাদেরকে এটি করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন এবং আজ, আমরা এটি সম্পন্ন করেছি।
অন্যদিকে ইরান এই সিদ্ধান্তে হতাশা ব্যক্ত করেছে। এই ধরনের পদক্ষেপ একটি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত নজির’ সৃষ্টি করবে বলেও দেশটি বলেছিল।
ইরান সরকারের বিভিন্ন নীতি নারী ও মেয়ে শিশুদের অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, এমন অভিযোগ তুলে দেশটিকে বাদ দেয়ার প্রস্তাব তোলে যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কমিশন প্রতিবছর মার্চে বার্ষিক সভায় মিলিত হয়।
মূলত গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই বিক্ষোভে টালমাটাল ইরান। হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী কুর্দি ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেয়া হয় এই তরুণীকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাহসা আমিনি।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মাহসা আমিনিকে তেহরানে নৈতিকতা পুলিশ তার চুল সঠিকভাবে না ঢেকে রাখার অভিযোগে আটক করেছিল। তার মৃত্যুর পর থেকেই ইরানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে।