রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দেশটির সামরিক বাহিনীর মহড়া পরিদর্শন করার সময় নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিমানবাহিনীর প্রধান নাম ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কো। বেলারুশের এই সেনা প্রস্তুতি ঘিরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে ইউক্রেনে। খবর আল জাজিরার।
সম্প্রতি বেলারুশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিমির ম্যাকেই (৬৪) মারা যান। তবে তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা বেল্টা জানায়, বিমানবাহিনীর উপকমান্ডারের দায়িত্বে থাকা আন্দ্রেই লুকিয়ানোভিচকে পদোন্নতি দিয়ে বিমানবাহিনীর প্রধান করেছেন। গত মাসে বয়সের অভিযোগ তুলে বিমানবাহিনীর প্রধানকে সরিয়ে দেয়া হয়।
বেলারুশ শুরু থেকেই অবশ্য বলে আসছে, তারা ইউক্রেন যুদ্ধে জড়াবে না। তবে লুকাশেঙ্কো রুশ বাহিনীকে বেলারুশ ভূখণ্ড ব্যবহার করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে আক্রমণের সুযোগ করে দেন। এ ছাড়া সীমান্তে ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে বেলারুশের সেনাদের পাহারায় বসিয়েছেন।
গত সপ্তাহ থেকে বেলারুশে বিভিন্ন সামরিক মহড়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসবিরোধী মহড়াও জোরদার করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে কিয়েভে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। কিয়েভের আশঙ্কা, রাশিয়ার পক্ষ থেকে যুদ্ধে নামতে পারে বেলারুশের বাহিনী। রাশিয়া ও বেলারুশ দীর্ঘদিন ধরে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামরিক নানা সহযোগিতা রয়েছে।
পশ্চিমা সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বেলারুশের ছোট সেনাবাহিনীর যুদ্ধের অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। তারা যুদ্ধে বড় পার্থক্য তৈরি করতে পারবে না। তবে বর্তমানে ইউক্রেনের বাহিনী দক্ষিণে ও পূর্বে লড়াই চালাচ্ছে। এখন উত্তর দিক থেকে হামলা হলে তাতে ইউক্রেনে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে।
বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেলারুশের সেনারা মহড়ার অংশ হিসেবে নির্দিষ্ট এলাকায় দ্রুত অবস্থান নেবে। পশ্চিম ও পূর্ব বেলারুশে যাতায়াতের সেতু পারাপারের বিষয়টিও ঠিক করবে। এ সময় ওই এলাকায় লোকজন চলাচল করতে পারবে না।
এদিকে মঙ্গলবার আবারও দনবাস অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এতে বেশকয়েকটি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এ হামলায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এদিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির একটি শান্তি প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে রাশিয়া। এক বিবৃতিতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, কিয়েভ নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা মেনে নিলেই শান্তি আলোচনা সম্ভব। জেলেনস্কি তার শান্তি প্রস্তাবে সম্পূর্ণ রুশ সেনা প্রত্যাহারের দাবি করেছিলেন।