নাইজেরিয়ায় (Nigeria) জেহাদিদের মধ্যেই দ্বন্দ্বের জেরে খুন হলেন ৩৩ মহিলা। দুই মৌলবাদী সংগঠন আইসিস (ISIS) ও বোকো হারামের (Boko Haram) মধ্যে লাগাতার সংঘর্ষের জেরেই এই হত্যালীলা চালানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নিহত ৩৩ মহিলাদের প্রত্যেকেই আইসিস জেহাদিদের স্ত্রী।
বোকো হারামের এক জেহাদিকে খুন করার প্রতিশোধ নিতেই গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, নাইজেরিয়ায় ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় বোকো হারাম ও আইসিস। কিন্তু দুই গোষ্ঠীর মতাদর্শ আলাদা হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই লড়াই চলছে।
৩৩ জনকে হত্যার ঘটনার সূত্রপাত বেশ কিছু দিন আগেই। নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, একটি অঞ্চলের দখল নিয়ে ঝামেলায় জড়ায় আইসিস ও বোকো হারামের জঙ্গিরা। মীমাংসা না হওয়ার ফলে পূর্ব আফ্রিকার আইসিস জেহাদিদের হাতে খুন হন বোকো হারামের কমাণ্ডার। মালাম আবুবকর নামে ওই কমাণ্ডার-সহ অন্তত ১২ জন জেহাদিকে খুন করে আইসিস জঙ্গিরা। তার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে বোকো হারাম। জঙ্গি ছাড়াও তাদের সঙ্গিনীদের খুন করার পরিকল্পনা করে নাইজেরিয়ার উগ্রপন্থী সংগঠনটি।
আলি নুলদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়। চলতি সপ্তাহেই নাইজেরিয়ার সাম্বিসা জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় একাধিক আইসিস জঙ্গিকে হত্যা করে বোকো হারামের এই দল। তারপরেই আইসিস জঙ্গিদের ক্যাম্পে গিয়ে মহিলাদের উপর হামলা চালানো হয়। হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ৩৩ জন মহিলা, তাঁরা সকলেই আইসিস জঙ্গিদের স্ত্রী। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই অনুমান নাইজেরিয়া প্রশাসনের। প্রসঙ্গত, বোকো হারামের বিরুদ্ধে ব্যাপক নৃশংসতার অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার।
২০০৯ সাল থেকে নাইয়জেরিয়ার উত্তরদিকে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম। সরকার ফেলে দিয়ে দেশে শরিয়তি শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায় তারা। এই দাবিতে দেশের নানা প্রান্তে জঙ্গি হামলা চালিয়েছে বোকো হারাম। সেই সঙ্গে ধর্ষণ, অপহরণের মতো একাধিক অপরাধের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগেই এই বোকো হারাম থেকেই জন্ম নেয় পূর্ব আফ্রিকার আইসিস জঙ্গি সংগঠন। বোকো হারামের ইসলামিক মতাদর্শের সঙ্গে সহমত না হতে পেরেই পৃথক গোষ্ঠী তৈরি হয়। তারপর থেকেই দুই জেহাদি সংগঠনের মধ্যে হিংসা লেগেই রয়েছে।