২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৩:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন


নির্বাচনী সহিংসতায় ৩৭ বাড়ি ভাঙচুর, ২জনকে কুপিয়ে জখম
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০২-২০২২
নির্বাচনী সহিংসতায় ৩৭ বাড়ি ভাঙচুর, ২জনকে কুপিয়ে জখম নির্বাচনী সহিংসতায় ৩৭ বাড়ি ভাঙচুর, ২জনকে কুপিয়ে জখম


মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় সামাজিক দলাদলি ও সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ৩৭টি বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) শ্রীপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের চর-গোয়ালপাড়া ও সাহেবপাড়া গ্রামে শ্রীপুর ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিয়ার রহমান মন্ডলের বাড়িসহ তার সমর্থকদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

একালাবাসী জানান, গত ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩ নং ওয়ার্ডে টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে সদস্য পদে বিজয়ী হন শ্রীপুর ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান। সদস্য পদে মোরগ প্রতীক নিয়ে বিএনপি সমর্থক মন্নু মন্ডল পরাজিত হন। এরপর থেকেই সিরাজ মন্ডল ও মন্নু মন্ডলের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগে আছে।

তারা জানান, ৩ নং ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য প্রার্থী মন্নু মন্ডল ও তার সহযোগী সিরাজ মন্ডলের সমর্থকরা একজোট হয়ে এই হামলা চালিয়েছেন বলে বদিয়ার রহমান দাবি করেছেন। সংঘর্ষ চলাকালে রোকেয়া বেগম নামের এক নারী আহত হয়েছেন।

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রথমে বেলা ১টার দিকে এবং পরে বিকেল আড়াইটার দিকে দুই দফায় এ হামলায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্রীপুর থানা পুলিশ প্রথমে হিমশিম খায়। পরে মাগুরা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সরেজমিনে দুটি গ্রামে দেখা গেছে, অধিকাংশ ঘরের টিনের বেড়া রামদা দিয়ে কুপিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। এ সময় এলাকায় কোনো পুরুষ লোকের দেখা পাওয়া যায়নি। শুধু নারীরাই তাদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো।

বদিয়ার রহমান মন্ডল বলেন, বুধবার বেলা ১টার দিকে সিরাজ মন্ডল ও মন্নু মন্ডল নেতৃত্ব দিয়ে তার লোকজনকে দিয়ে আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে ভাঙচুর করে। আমি থানায় ফোন করলে পুলিশ এসে তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু এরপর আবার বেলা আড়াইটার দিকে পার্শ্ববর্তী তিন গ্রাম থেকে লোক এনে আমার সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর চালানো হয়। মোট ৩৭টি বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার তারা আমার সমর্থক হাবিলকে বেদম মারধর করে।

তবে এ অভিযোগ সম্পূর্ণ নাকচ করে দিয়ে শ্রীপুর উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৪ নং শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মসিয়ার রহমান বলেন, ঘটনাটি অন্য গ্রামের। সেখানে আমার কোনো লোকজন যায়নি। ওখানে বিএনপির লোকজনের সাথে তাদের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সাথে আমার সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রশ্নই আসে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১২টার দিকে বদিয়ার মন্ডলের প্রতিপক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন শ্রীপুর থেকে মোটরসাইকেল যোগে সাহেবপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে আসার পথে বদিয়ার মন্ডলের সমর্থকেরা তাকে কুপিয়ে আহত করে। আহত অবস্থায় তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে পরে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

মতামত জানতে অভিযুক্ত মন্নু মন্ডল ও সিরাজ মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। এ সময় তাদের বাড়িতে কোনো নারীরও দেখা মেলেনি। 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুক দেব রায় বলেন, এখন মাঠে আছি, 'নো কমেন্ট'।

বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন মাগুরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) কামরুল হাসান। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে অফিসিয়াল কোনো কমেন্ট করতে পারছি না। তবে মাগুরা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে এখানে মোতায়েন করা হয়েছে।

রাজশাহীর সময় /এএইচ