জিনের বাদশার খপ্পরে পড়ে প্রায় ৭ লাখ টাকা হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন নাজমা খাতুন (৩৬) নামে এক নারী। তিনি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের ধনেশাহ পাড়ার বাসিন্দা। ভুক্তভোগী নারী মামলা করলে পুলিশ প্রতারককে আটক করে।
কথিত জিনের বাদশা মুক্তার রহমানের (২৭) বাড়ি গাইবান্দা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায়। সে এলাকার তবিবুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ জানায়, ১২ আগস্ট মধ্যরাতে ভুক্তভোগী নারীর মোবাইলে জিনের বাদশা পরিচয়ে একটি ফোন আসে। প্রতারক ভুক্তভোগী নারীকে বলে তোমার ভাগ্য খুলে গেছে। তোমার মতো ভাগ্য আর কারও হয় না। তুমি সাত হাড়ি সোনার মোহর পাবে। তবে সোনার মোহর পেতে হলে দুটি কুরআন শরিফ, জায়নামাজ ও আগরবাতির নির্যাস কেনার জন্য আড়াই হাজার টাকা দিতে হবে।
ফোন কলের বিষয়ে নাজমা তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলে সরল বিশ্বাসে বিকাশের মাধ্যমে দোকান থেকে জিনের বাদশার দাবিকৃত টাকা পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে প্রতারক একই নাম্বার আবারও ফোনে জানায়, তোমার বাড়িতে শুকরের হাড় আছে। সেই হাড় সরাতে হবে ও উট কুরবানি করতে হবে। তোমার বাবা-মা আগুনের পোশাক পরিধান করে আছে। এগুলো দূর করতে হবে। এগুলো না করলে তোমার বংশ নির্বংশ হয়ে যাবে। এছাড়া আরও ভয়ভীতি দেখিয়ে আবাদি জমি ও বাড়ির গরু-ছাগল বিক্রি করিয়ে ছয় লাখ ৩২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
এরপর কৌশলে জানায়, নাজমার বাড়িতে সোনা-গয়না আছে, সেগুলো জিনের বাদশাকে দিতে হবে ও বিনিময়ে সোনার মোহর পাবেন। প্রতারক জিনের বাদশার কথা অনুযায়ী ৪০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার নিয়ে জিনের বাদশার কথিত এক খাদেমের হাতে দিলে খাদেম একটা ‘সোনার পুতুল’ লাল কাপড়ে মুড়িয়ে দেয়। বলা হয় এ ঘটনা কারো কাছে প্রকাশ করা যাবে না। প্রকাশ হলে বা পুতুল খোলা হলে তার সন্তানের মৃত্যু হবে অথবা অন্ধ হয়ে যাবে।
মূর্তি নিয়ে বাড়ি এসে রাখার পর মোহর না পেলে ভুক্তভোগীর সন্দেহ হয়। তিনি থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে রোববার (২০ নভেম্বর) কথিত জিনের বাদশাকে আটক করে। সোমবার (২১ নভেম্বর) সকালে পুলিশ আদালতে পাঠায়।
খানসামা থানার এসআই শামীম বলেন, প্রতারকের মোবাইল নাম্বারের বিকাশ হিসাব সংগ্রহ করে আসামিকে শনাক্ত করার পর রাতভর অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। এ সময় তার নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সিমসহ মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এবং রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।