২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:৩৩:৪৯ অপরাহ্ন


ফুলবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী কবিগানে মাতলেন শ্রোতারা
আফরোজ জাহান সেতু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১১-২০২২
ফুলবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী কবিগানে মাতলেন শ্রোতারা ফুলবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী কবিগানে মাতলেন শ্রোতারা


দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্রীশ্রী শ্যামা কালী মন্দিরের উদ্যোগে আয়োজিত জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী কবিগানের সুরে ও তালে মাতলেন উপজেলার বিভিন্ন বয়সী কবিগানপ্রেমীরা। 

শ্যামা কালী পূজা উপলক্ষে প্রতিবারের ন্যায়ে গতকাল শুক্রবার রাতে কেন্দ্রীয় শ্রীশ্রী শ্যামা কালী মন্দির চত্বরের মাঝখানে বানানো মঞ্চে দুই কবিয়ালের বাগযুদ্ধে মুগ্ধ হলেন দর্শক। কবিয়ালরা হলেন, পার্বতীপুর উপজেলার মরনাই এলাকার কবিয়াল বরাত সরকার এবং বিরল উপজেলার কবিয়াল সাথী সরকার। 

জানা যায়, বাঙালি লোকসংস্কৃতির একটি অন্যতম ধারা কবিগান। যা বর্তমানে বিলুপ্ত প্রায়। সেই হারিয়ে যাওয়া কবিগান প্রতিবছর শ্যামা কালী পূজার পরপরই আয়োজন করে আসছে কেন্দ্রীয় শ্রীশ্রী শ্যামা কালী মন্দির পরিচালনা কমিটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, হারমনিয়াম, ঢোল, বাঁশি, বেহালাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের তালে পাল্টাপাল্টি যুক্তি, তর্ক ও গানে গানে দুই কবিয়ালের মধ্যে লড়াই চলছে। এদিকে শীতের পরশে চাঁদর ও কাঁথা মুড়িয়ে মনোমুগ্ধকর এই আয়োজন কেউ দাঁড়িয়ে আবার কেউবা মাটিতে বিছানো চটে বসে আবার কেউ কেউ মন্দিরের সিঁড়িতে বসে উপভোগ করছেন। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী কবিগান শুনে অনেকেই খুশি। আবার অনেক প্রবীণরা হারিয়ে গেছিলেন সেই পুরোনো দিনগুলোতে। 

শিবনগর ইউনিয়নের মধ্যসুলতানপুর থেকে আসা দর্শক বেলী রানী ও তপতি রানী বলেন, লোকসংগীতের মধ্যে লালন, বাউল, ভান্ডারি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, কীর্তন, কবিগান, যাত্রাপালা, শ্যামাসংগীত আমাদের খুবই প্রিয়। এসব গানের আসর বসলেই আমরা সেখানে যাই। এখানে এসে কবিগানের তর্ক-বিতর্কের যুদ্ধ আর কবিতার ছলে গান শুনে অনেক ভালো লেগেছে।

কবিগানের পৃষ্ঠপোষক কেন্দ্রীয় শ্রীশ্রী শ্যামা কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়প্রকাশ গুপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক জয়রাম প্রসাদ বলেন, শতবছর ধরে শ্রীশ্রী শ্যামা কালী পূজোর পরপরই প্রতিবছর মন্দিরের উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী এ কবিগানের আয়োজন করা হয়। দূরদূরান্ত থেকে কবিগান শুনতে মন্দিরে জড় হন দর্শক ও ভক্তরা। সবধর্মের মানুষ রাত জেগে এই কবিগান উপভোগ করেন।

দিনাজপুর জেলা শাখা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের অন্যতম সদস্য সহকারী অধ্যাপক অমর চাঁদ গুপ্ত অপু বলেন, সময়ের সাথে কবিগান আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এখানে এসে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও খুঁজে পেয়েছি সেই পুরোনো আনন্দ।