হঠাৎ করেই মানিকগঞ্জের ঘিওরে নদীতে পানি বৃৃদ্ধি পেয়েছে। অসময়ের পানি বৃদ্ধিতে দেখা দিয়েছে মারাত্মক নদীভাঙন। ঘিওর উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী, পুরাতন ধলেশ্বরী ও কালীগঙ্গা নদী পাড়ের মানুষজনের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এই তিন নদীতেই গত চার দিন ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বসতবাড়ি, ফসলি জমি, গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনা যে কোনো সময় নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
উল্লেখ্য, চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঘিওর উপজেলায় ভাঙনে নদী গর্ভে চলে গেছে প্রায় অর্ধশত বসতভিটা, ব্রিজ, কালভার্ট, ফসলি জমি, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা। কার্তিক মাসে অসময়ের পানি বৃদ্ধি ও ভাঙনে দীর্ঘ হচ্ছে ভিটামাটি হারানো মানুষের সংখ্যা। ভাঙন এলাকার মানুষজন আসবাবপত্র আর অন্যান্য সামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আর ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, ঘিওর সদর ইউনিয়নের পঞ্চরাস্তা,চরবাইলজুরি এলাকায় পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর উত্তর পাড়ে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে কমপক্ষে ১৫টি বসত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদীভাঙনে। এই নদীর ভাঙনে শ্রীধরনগর, কুস্তা, মাইলাগী, ঘিওর পূর্বপাড়া, ঘিওর নদীর উত্তর পারের বাজার এবং ব্রিজসহ ১২-১৩টি প্রতিষ্ঠান হুমকির মধ্যে রয়েছে। ভয়াবহ হুমকির মধ্যে রয়েছে উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদাম ও মহা শ্মশান।
এছাড়া ইছামতি শাখা নদীর ভাঙনের শিকার বড় রামকান্তপুর- কুঠিবাড়ী এলাকার ২৬টি পরিবার। এই নদীর ভাঙনে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর গরুর হাট অর্ধেক বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের হুমকির মধ্যে রয়েছে কুস্তা কফিল উদ্দিন দরজি উচ্চবিদ্যালয়, কুস্তা ব্রিজ, ঘিওর- গোলাপনগরের রাস্তা, বেপারীপাড়া কবরস্থান, রসুলপুর গ্রাম ও কবরস্থান, বেপারীপাড়া কবরস্থান। এদিকে কালীগঙ্গা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে ১ কি.মি. কাঁচা রাস্তা ও ১৫টি বসতবাড়ি। এই নদীর ভাঙনের হুমকিতে, বানিয়াজুরী ইউনিয়ের তরা রমজান আলী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, এতিমখানা, তরা শ্মশানঘাট ও মন্দির, একটি বাজার, মির্জাপুর এলাকার রাস্তা, জাবরা নদীর উত্তর পাড়ের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও বসত ভিটা।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ইতিমধ্যে ঘিওর হাট, কুস্তা ব্রিজ ও খাদ্যগুদাম, শ্মশান-মন্দির ভাঙনের কবল থেকে রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলাসহ কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, সাড়ে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর কাজ শুরু হয়েছে।