যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম উৎসব বিদ্যাদেবী সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জানুয়ারি) দুপুর থেকে নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি হিন্দু পূর্ণার্থীরা দলে দলে বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজায় অঞ্জলি ও আরতীতে অংশ নেন।
তার এক হাতে বীণা অন্য হাতে বেদপুস্তক। অর্থাৎ বীণাপানিতে যার তিনি বীণাপানি- সরস্বতী, আর এ থেকেই বাণী অর্চনার প্রচলন। বিদ্যাদেবীর কৃপালাভের আশায় ঘরে ঘরেই চলছে পূজা অর্চনা। ধর্মীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সাদা রাজহাঁসে চড়ে বিদ্যা ও জ্ঞানদাত্রী দেবী সরস্বতী পৃথিবীতে আসেন।
বাণী অর্চনা, অঞ্জলি, শিশুদের হাতেখড়ি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল পূজার আয়োজনে। ওঁম শক্তি মন্দিরের পূজারী প্রবাস চক্তবর্তী সরস্বতী পূজার তাৎপর্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজার বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে। পঞ্চমীর শুভলগ্নে দেবীকে আবাহনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সরস্বতী পূজার আনুষ্ঠানিকতা।
হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থে সরস্বতীর রূপ-মাহাত্ম্য বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে। বেদ, পুরাণ ও বিভিন্ন শাস্ত্রীয় গ্রন্থে সরস্বতীর নানান রূপ ও প্রকৃতির বর্ণনা পাওয়া যায়।
বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে সরস্বতীর মাহাত্ম্য যেভাবেই বা যে রূপেই তুলে ধরা হোক না কেন, বাঙালি হিন্দু সংস্কৃতিতে সরস্বতীকে বিদ্যার দেবী হিসাবে পূজা করা হয়ে থাকে। বিদ্যার দেবী মানুষকে আলোকিত করে, মনুষত্বের চোখ খুলে দেয়।
হিন্দু সম্প্রদায় সরস্বতীর যে মূর্তি পূজা করে সেই সরস্বতীর রূপ দ্বিভূজা, শ্বেত বরণী, শ্বেতাম্বরা, শ্বেতদল বাসিনী, শ্বেত হংসবিহারিণী ও বীণা পুস্তক- কমলধারিণী।
সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা তাদের মনের সকল অন্ধকার, অজ্ঞতা দূর করার জন্য বিদ্যা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া তথা মানবিক হওয়ার জন্য।’ তিনি আরও বলেন এবারও বিশ্বথেকে মানবজাতির কল্যানে মহামারী করোনা মুক্তির বিশেষ প্রার্থনা করা হয় । জ্যাকসন হাইটসের ওঁম শক্তি মন্দির, উডসাইডের দিব্যধাম সেবাশ্রম মন্দির, কুইন্স প্যালেসে বীণাপাণি সংঘ, সত্যনারায়ন মন্দিরসহ ব্রঙ্কস, ব্রুকলীন ছাড়াও নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন স্থানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রায় ২০টি পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বাণী অর্চনা, নৃত্য,শঙ্খ ধ্বনি, ভক্তি সংগীত, আর প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা।
রাজশাহীর সময় /এএইচ