২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন


চাকমা সম্প্রদায়ের যুবতীকে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী যিশু গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১০-২০২২
চাকমা সম্প্রদায়ের যুবতীকে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী যিশু গ্রেফতার চাকমা সম্প্রদায়ের যুবতীকে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী যিশু গ্রেফতার


পার্বত্য রাঙামাটির বাঘাইছড়ি এলাকায় উপজাতি মেয়েকে গণধর্ষণ মামলার পলাতক আসামী যিশু চৌধুরীকে (২৭) চট্টগ্রাম মহানগরীর আন্দরকিল্লা হতে আটক করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার যিশু  চৌধুরীকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি থানার করেঙ্গাতলী বাজার এলাকার সমীর চৌধুরীর ছেলে।

জানা যায়, ভুক্তভোগী উপজাতি চাকমা সম্প্রদায়ের ২১ বছর বয়সের এবং রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি এলাকার একটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় উর্ত্তীণ হওয়া ছাত্রী। গত (১৫ জুলাই) রাত ৯টার দিকে পূর্ব পরিচয় ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামী বিপ্লব বড়ুয়া ছাত্রীকে জরুরী আলাপ আছে বলে বাড়ির বাহিরে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ওই ছাত্রী ঘরে ফিরে না আসায় তার মা আশে-পাশে খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন (১৬ জুলাই) ভোরে ছাত্রী বাড়িতে এসে জানায় আসামী বিপ্লব বড়ুয়া তাকে বাড়ির বাহিরে ডেকে নেওয়ার পর আসামী যিশু চৌধুরী সহ কতিপয় দুস্কৃতিকারী তার মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক বাঘাইছড়ি থানাধীন বাড়–য়ার পাড়ায় একটি বসত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে সকল মিলে সারারাত ব্যাপি তাকে জোর পূর্বক গণধর্ষণ করেছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানায় ৫জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/ ২০০৩)এর ৯(৩)/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

এরপর রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় বাঘাইছড়ি থানার চাঞ্চল্যকর ২১ বছরের মেয়েকে গণধর্ষণ মামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ী চাকমাদের সাথে সেখানকার সংখ্যালঘু বড়ুয়া, হিন্দু ও মুসলিমদের দ্বন্ধ চরম আকার ধারণ করে এবং এক পর্যায়ে গোলাগুলির পর্যায়ে যায়। এজাহার নামীয় ৫জন আসামীর মধ্যে ২জন বৌদ্ধ, ১জন হিন্দু ও ২জন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক ছিল। ৫জন আসামীই একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিন্তু আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে ব্যপক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। বর্ণিত আসামীরা এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছিল।

মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও চাঞ্চল্যকর হওয়ায়, মামলা রুজুর পর থেকে মামলার এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-০৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরদারী অব্যহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, উক্ত ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় ২নং আসামী যীশু চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানাধীন রাজাপুর লেইন আন্দরকিল্লা এলাকায় অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টায় বর্ণিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামী যিশু চৌধুরীকে (২৭), গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার যিশু চৌধুরী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে ছাত্রীকে গণধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করে। 

উল্লেখ্য, ওই গণধর্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের ফলে পাহাড়ী চাকমা এবং সংখ্যালঘুদের জনমনে র‌্যাবের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়েছে ।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানায় র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম।