গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জে দুই বন্ধু সবুজ বানার্ড ঘোষাল ও মো. শাহীনুর। পরিকল্পনা করেন, এক সঙ্গে মদ খাবেন। মদ কেনার দায়িত্ব পড়ে সবুজের ওপর। মদ কিনে আনেন সবুজ। তবে বিপত্তি বাধে খেতে গিয়ে। নিম্ন মানের ভেজাল মদ কিনে আনার অভিযোগ তোলে সঙ্গী মো. শাহীনুর।
বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে গড়ায়। এর মধ্যে বুকে আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সবুজ। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এতে ভয় পেয়ে যান শাহীনুর। পাছে ধরা পড়ে সেই ভয়ে বন্ধুর মরদেহ আট টুকরো করে সেগুলো বিভিন্ন জায়গায় লুকান শাহীনুর।
এ ঘটনায় ঘাতক মো. শাহীনুরকে (৩০) সাতক্ষীরা থেকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার দুপুরে অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শাহীনুর। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মো.মাকছেদুর রহমান সময় সংবাদকে জানান, রোববার (২ অক্টোবর) সাতক্ষীরা থেকে মো. শাহীনুরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার শাহীনুর সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বালিয়া এলাকায় বাসিন্দা।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতের রক্তমাখা জামা-কাপড় ও হত্যায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও শাহীনুরের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করার চেষ্টাও করে সবুজ। এটিও হত্যার একটি কারণ হতে পারে।
এর আগে শনিবার সকালে সবুজ বার্নাড ঘোষালের টুকরো টুকরো মরদেহ পূর্বাচল অ্যাপারেলসের দক্ষিণ পাশে একটি ডোবায় ও এর পাশেই একটি জঙ্গলে দুই হাতসহ দেহের বাকি অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। সবুজ জেলার কালীগঞ্জের পানজোড়া এলাকার অমূল্য বার্নাড ঘোষালের ছেলে। তিনি পানজোড়া এলাকার পূর্বাচল অ্যাপারেলসে কোয়ালিটি সেকশনে কাজ করতেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে কর্মস্থল পূর্বাচল অ্যাপারেলস লিমিটেডের ফ্যাক্টরির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন সবুজ। রাতে বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তার সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নিহতের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী।
পরে শনিবার (১ অক্টোবর) সকালে পূর্বাচল অ্যাপারেলসের দক্ষিণ পাশে একটি ডোবায় এক যুবকের মরদেহের কোমরের নিচের অংশ এবং এর অদূরে উত্তর দিকের একটি জঙ্গলে দুই হাত পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেন এলাকাবাসী। রোববার (২ অক্টোবর) বাকি অংশসহ মরদেহের আট টুকরো উদ্ধার করা হয়।