১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার, ০৫:৩৪:৩৮ পূর্বাহ্ন


রবিবার সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট শুরু, রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৪-২০২৫
রবিবার সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট শুরু, রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা রবিবার সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট শুরু, রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা


কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রস্তুত সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আগামীকাল রবিবার সন্ধ্যায় সেখান থেকে স্পেনের উদ্দেশে উড়বে প্রথম কার্গো ফ্লাইট। এই টার্মিনালের মাধ্যমে যুক্ত হলো দেশের রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা। তবে এখনই সিলেটের পণ্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

ওসমানী বিমানবন্দরের এই টার্মিনালের প্রাথমিক ধারণক্ষমতা ১০০ টন। ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের বাজারের জন্য আধুনিক মানসম্পন্ন যন্ত্রপাতি, বিশেষ করে এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইউডিএস) যুক্ত রয়েছে এতে।

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর এই প্রথম আরএ-থ্রি প্রটোকল অনুসরণ করে চালু হলো কোনো কার্গো টার্মিনাল।ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ায় এটি দেশের রপ্তানি খাতে নতুন বিকল্প হয়ে উঠছে।

তবে এখনই সিলেটের উৎপন্ন পণ্য বিশেষ করে পচনশীল সবজি—এই টার্মিনাল দিয়ে রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এ জন্য প্রয়োজন আধুনিক প্যাকিং হাউস, যা এখনো সিলেটে গড়ে ওঠেনি। বর্তমানে দেশের একমাত্র সরকারি প্যাকিং হাউস রয়েছে রাজধানী ঢাকার শ্যামপুরে।

যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা দীর্ঘদিনের।

তবে এসব দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা প্রটোকলের কারণে এত দিন একমাত্র ভরসা ছিল ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেখানেও বর্তমানে অতিরিক্ত চাপ। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বিকল্প রপ্তানি পয়েন্ট হিসেবে সামনে এসেছে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন কার্গো টার্মিনাল।প্রাথমিকভাবে ১০০ টন ধারণক্ষমতার এই টার্মিনাল ২০২২ সালেই কার্গো পরিবহনের জন্য উপযুক্ত স্বীকৃতি পেলেও তখন ঢাকায় চাপ কম থাকায় সিলেটমুখী হননি রপ্তানিকারকরা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে।

ঢাকায় চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সিলেটে কিছু কার্গো প্লেসমেন্ট শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর পরিচালক মোহাম্মদ হাফিজ আহমেদ। হাফিজ আহমেদ আরো বলেন, কার্গো ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়বে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় সুবিধা যোগ হলে সিলেট থেকেই স্থানীয় পণ্য রপ্তানিও সম্ভব হবে। তিনি বলেন, প্যাকিং হাউস স্থাপন হলে সিলেটের সবজি সরাসরি লন্ডনে পৌঁছাতে পারবে। এতে প্রবাসীদের সঙ্গে দেশের বন্ধন আরো দৃঢ় হবে।

তবে দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হলো—এত কিছু প্রস্তুত থাকলেও আপাতত সিলেটের রপ্তানি পণ্য এই টার্মিনাল দিয়ে পাঠানো সম্ভব নয়। কারণ সিলেটের প্রধান রপ্তানি পণ্য শাক-সবজি, যা দ্রুত পচনশীল। এই ধরনের পণ্য রপ্তানিতে আরএ-থ্রি প্রটোকল ছাড়াও প্রয়োজন আধুনিক প্যাকিং হাউস।

বিমানবন্দর পরিচালক বলেন, ‘যদি সিলেটে প্যাকিং হাউস স্থাপন করা যায়, তাহলে এখানকার সবজি দ্রুত লন্ডনে পৌঁছে যাবে।প্রবাসীদের টেবিলে নিজ মাটির স্বাদ পৌঁছালে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে দেশের সংযোগও আরো দৃঢ় হবে।’

নতুন কার্গো টার্মিনাল সিলেটসহ পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য যেমন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে, তেমনি এর পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে অবকাঠামোগত ঘাটতি দূর করাও জরুরি হয়ে পড়েছে।

রবিবারের ফ্লাইট উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, সচিব নাসরীন জাহান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া এবং মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।