পুলিশি হেফাজতে ইরানি তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে জ্বলছে সেদেশে। ঘৃণা, ক্ষোভ, রাগ ক্রমশ দাবানলের আকার নিচ্ছে ইরানে। শহরে শহরে মেয়েদের জমায়েত সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে। বুধবার তা অন্যমাত্রা নিল। ইরানের কারমেন শহরে নিজেদের গা থেকে হিজাব ছেড়ে রাস্তায় ফেলে তাতে আগুন দিয়ে দিলেন তাঁরা। আর এরমধ্যেই খবর, ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমে ইরানে ইতিমধ্যেই নিহত হয়েছেন ৩১ জন। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে সকলের। বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
ইরানের মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান মাহমুদ আমিরি-মোঘাদ্দাম এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, “মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকারের দাবিতে পথে নেমেছিলেন ইরানের নাগরিকেরা। সরকার তাঁদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বুলেট ছুড়েছে। রাষ্ট্রের হাতে ৩১ জন নাগরিক খুন হয়েছেন।” ইরানের এক মানবাধিকার সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, সেদেশের ৩০টি শহর এবং গ্রামে পুলিশের হাতে মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ চলছে। তাঁদের দমন করতেই প্রতিবাদী এবং মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেফতার করছে ইরান পুলিশ।
গত সপ্তাহের শেষে ইরানের উত্তরে কুর্দিস্তানেই প্রথম এই প্রতিবাদ শুরু হয়। সেখানেই থাকতেন মাহশা আমিনি। জানা গেছে, ইরানের কুর্দিস্তান থেকে দেশের রাজধানী তেহরানে যাচ্ছিলেন ওই তরুণী। সেখানে তাঁর কয়েকজন আত্মীয়ের বাড়ি। তাঁদের সঙ্গেই দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় সময়ই আচমকা ইরানের পুলিশের চোখে পড়ে যান ওই তরুণী। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। তারপর পিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ।
এই খবর ছড়িয়ে পড়েছিল হুহু করে। তারপর প্রতিবাদ ক্রমশ গণসংক্রমণের আকার নিচ্ছে। ইরানের একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, ২০১৯ সালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে যে তীব্র আন্দোলন হয়েছিল, এবার তাকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। বহু জায়গায় জখম হয়েছে পুলিশও। সব মিলিয়ে উত্তাল ইরান। আর সেই সুনামি তৈরি করছেন মহিলারাই।