সকাল সাড়ে সাতটা। ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের দরজা খুলে গেল। বাইরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি দাঁড়ালেন দেশের ৫৫তম প্রধানমন্ত্রী। বললেন, ''আপাতত, এই পর্যন্তই, বন্ধুরা। তবে আমি ফিরবই।'' এই কথা বলে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মাথা ঝাঁকিয়ে মাইক রাখার ডেস্কের উপরে দু'বার ঘুষিও মারলেন। তার পরে বললেন, ''কোনও মহাকাশ যান ফিরতি পথে হয়তো প্রশান্ত মহাসাগরের কোনও অখ্যাত জায়গায় গিয়ে পড়ে।
কিন্তু তার ভিতরে নভশ্চর অক্ষত থাকেন। এবং ফের মহাকাশ যাত্রার পরিকল্পনা করেন।'' অসংখ্য কেলেঙ্কারিতে মুখ পুড়িয়ে গদি ছাড়তে বাধ্য হওয়া বরিস জনসনের এটাই আজকের 'বিদায়-বার্তা'।
শুধু ফেরার 'আশ্বাস'ই নয়, তাঁর নানা 'কৃতিত্বের' কথাও উল্লেখ করতে ছাড়েননি জনসন। বলেছেন, কী ভাবে, তাঁর নেতৃত্বেই সম্ভব হয়েছিল ব্রেক্সিট এবং ব্রিটেনের সফল কোভিড প্রতিষেধক কর্মসূচি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে যে ভাবে পশ্চিমি দুনিয়া দাঁড়িয়েছে, তা-ও হয়েছে ব্রিটেনের স্পষ্ট রুশ-বিরোধী অবস্থানে, দাবি করেন বরিস। একই সঙ্গে নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ় ট্রাসকে সমর্থন করার জন্য বিভেদ ভুলে কনজ়ারভেটিভ দলের সব সদস্যের কাছে আর্জি জানান বরিস। বলেন, ''সবাই একজোট হয়ে থাকতে হবে। ট্রাস ও তাঁর টিমকে দেশের কাজ করার জন্য সাহায্য করতে হবে।''
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে এই বক্তৃতার পরে বরিস উড়ে যান স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে। সেখানেই আপাতত রয়েছেন রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ। এর আগে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফাপত্র গ্রহণ এবং নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথ, দু'টিই হয়ে এসেছে লন্ডনের বাকিংহাম প্রাসাদে। কিন্তু বালমোরাল প্রাসাদে গরমের ছুটি কাটাতে গিয়ে হাঁটুর ব্যথায় কাবু রানি এখন আর লন্ডনে ফিরতে পারেননি। ফলে বরিস জনসন ও লিজ় ট্রাস, দু'জনকেই স্কটল্যান্ডে গিয়ে রানির সঙ্গে দেখা করতে হয়।
ইস্তফাপত্র দিয়ে জনসন বেরিয়ে আসার পরে দুপুর ১২টা দশে বালমোরালে পৌঁছন ট্রাস। রানি তাঁকে দেশের ৫৬তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার পরে ১২.৪০-এ বালমোরাল ছাড়েন তিনি।