২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৪:৪৪:০৫ অপরাহ্ন


ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে, উভয় দেশের মানুষ সুফল পাবে: শেখ হাসিনা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৯-২০২২
ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে, উভয় দেশের মানুষ সুফল পাবে: শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।


ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ফলপ্রসূ এই আলোচনার ফলাফল উভয় দেশের জনগণের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে এই মন্তব্য করেন তিনি। মঙ্গলবার টুইটারে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।

এর আগে নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষ হয়। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উভয় নেতার এই বৈঠক শেষ হয়। পরে তাদের উপস্থিতিতে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মাঝে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

এরপর সেখানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং আমি ফলপ্রসূ আলোচনার আরেকটি দফা শেষ করেছি। এই আলোচনার ফলাফল উভয় দেশের জনগণের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে। আমরা ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে বৈঠক করেছি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মোদীজির দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করি। এটি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গতি প্রদান করে চলেছে। ভারত হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও নিকটতম প্রতিবেশী। ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল হিসাবে পরিচিত।’

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর পানি ঢাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক এই নদীর পানির ন্যায্য পাওনা নিশ্চিতে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালালেও নানা কারণেই এই পানি ভাগাভাগি চুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে।

এনিয়ে মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশ অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধান করেছে এবং আমরা আশা করি যে- তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিসহ অন্য সকল অমীমাংসিত সমস্যা তাড়াতাড়ি অবসান হবে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বছর পূর্তি উপলক্ষে বছরব্যাপী আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের উদযাপনের সফল সমাপ্তির জন্য আমি ভারত সরকার এবং আমার ভারতীয় বন্ধুদের অভিনন্দন জানাতে চাই।

শেখ হাসিনার ভাষায়, ‘আমি শুভকামনা জানাই কারণ ভারত আত্মনির্ভর ভারত-এর জন্য প্রণীত সিদ্ধান্তগুলো অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে।’

শেখ হাসিনার আগে সেখানে বক্তব্য দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, গত বছর আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করেছি। আমরাও প্রথম ‘মৈত্রী দিবস’ উদযাপন করেছি। আগামী দিনে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

দিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে যৌথ বিবৃতিতে মোদি বলেন, বাংলাদেশ আজ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার এবং এই অঞ্চলে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। জনগণের সহযোগিতায় (সম্পর্কের) ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ ও পারমাণবিক খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নিয়েও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।

মোদি বলেন, আমরা বন্যা প্রশমনে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের সাথে বন্যা সংক্রান্ত রিয়েল-টাইম ডেটা শেয়ার করছি এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়েও আলোচনা করেছি। এটা অপরিহার্য, কারণ আমরা একসাথে সেইসব শক্তির মোকাবেলা করি যেগুলো আমাদের প্রতিপক্ষ।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেছি। করোনা মহামারি এবং সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫৪টি নদী প্রবাহিত হয় এবং উভয় দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে এসব নদী যুক্ত। আজ, আমরা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।