চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় করা মামলায় প্রক্টরিয়াল বডিকে তলব করেছেন আদালত। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞা এ আদেশ দেন। এছাড়া নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রীকেও আদালতে হাজির হতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলা সরকারি কৌঁসুলি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, গ্রেপ্তার আসামি নুর হোসেন শাওনের জামিন আবেদন করা হলে শুনানিকালে আদালত এ আদেশ দেন। প্রক্টরিয়াল বডির বক্তব্য নেওয়ার পর আদালত জামিন শুনানি করবেন। ১৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রাখেন আদালত।
জামিনে আপত্তি জানিয়ে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধি চর্চার কেন্দ্র। যেখানে শিক্ষার্থীদের পদচারণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ থাকার কথা সেখানে, এ আসামিরা এক ছাত্রীকে বিবস্ত্রই করেননি, শিক্ষা ও সভ্যতার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন। এই জাতীয় অপরাধের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার।
মামলার আসামিরা হলেন ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ আজিম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নুরুল আবছার, হাটহাজারী সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞানের প্রথম বর্ষের ছাত্র নুর হোসেন, স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের মাসুদ রানা ও একই কলেজের সাবেক ছাত্র সাইফুল আলম। তাঁদের মধ্যে আজিম ও আবছার ছাত্রলীগের কর্মী। তাঁদের দুজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য,গত ১৭ জুলাই রাত সাড়ে নয়টায় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়। এর এক দিন পর হাটহাজারী থানায় মামলা হয়।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। রাতেই ছাত্রীরা হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। ওই দিন রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে চার কার্যদিবসের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেন। অন্যথায় প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ করবে বলে জানান তিনি।