২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:১৪:৫৫ অপরাহ্ন


নাটোরের বাগাতিপাড়ায় হালিতে নয় কেজিতে বিক্রি হচ্ছে লেবু
মো. আবদুল্লাহ-আল-অনিক,বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৮-২০২২
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় হালিতে নয় কেজিতে বিক্রি হচ্ছে লেবু নাটোরের বাগাতিপাড়ায় হালিতে নয় কেজিতে বিক্রি হচ্ছে লেবু


আমরা জানি লেবু বিক্রি হয় হালি বা পিস হিসেবে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এবার লেবু বিক্রি হচ্ছে কেজি হিসেবে। এক কেজি লেবুর খুচরা মূল্য ৫ টাকা।

গত এক সপ্তাহ যাবৎ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা যায়। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির মধ্যেও লেবুর বাজার যেন নিম্নমুখী। বিক্রেতারা বলছেন আমদানী বেশি এবং বাজারে ক্রেতা সংকটের কারনে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ।

তমালতলা বাজারে লেবু বিক্রি করতে আসা মকবুল হোসেন জানান, চলতি মওসুমে তার বাগানে বেশ লেবু ধরেছে। লেবু উত্তোলন করে আড়তে বিক্রি করতে গিয়েছিলেন। প্রতি কেজি দুই টাকা দাম উঠায় সেখানে বিক্রি করেননি। পরে তমালতলা বাজারে প্রতি কেজি খুচরা মাত্র ৫ টাকা দরে দুই মণ লেবু ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজিতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি লেবু ধরেছে। এতে প্রতি লেবুর দাম পড়েছে মাত্র ২০ পয়সা থেকে ২৫ পয়সা। সবজি ব্যবসায়ী আনোয়ার জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় লেবুর সরবরাহ বেশি থাকায় দাম পড়ে গেছে। মাস দেড়েক আগেও তিনি প্রতি হালি লেবু বিক্রি করেছেন ১০ থেকে ২০ টাকা দরে। কিন্তু বর্তমানে ৫ টাকা কেজি দরে লেবু বিক্রি করছেন। নাটোরের এক ক্রেতা মোতালেব ইসলাম জানান, দাম কম হওয়ায় তিনি ৫ টাকা দিয়ে এক কেজি লেবু কিনেছেন।

আরেক ক্রেতা ইমরান জানান, গত শুক্রবারের হাটে তিনি মাত্র এক কাপ চায়ের দামে ২১ কেজি লেবু কিনেছেন। লেবু চাষী সাবেক ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান জানান, তার নিজের দুই বিঘা জমিতে লেবু বাগান রয়েছে। এলাচি ও চায়না থ্রি জাতের লেবু চাষ করেছেন। বাগানে বিপুল পরিমানে লেবু ধরেছে। কিন্তু ক্রেতা নাই। বাইরে থেকেও তেমন ক্রেতা এ অঞ্চলে আসছেনা। ফলে গাছ থেকে উত্তোলন না করায় বাগানেই মাটিতে পড়ে পচে যাচ্ছে।

লেবু ব্যবসায়ী নূরপুর মালঞ্চি গ্রামের মমতাজ উদ্দিন জানান, চলতি মওসুমে লেবু বিক্রি করে পরিবহন খরচ উঠছে না। উৎপাদন ও শ্রমিকের খরচ দিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতিতে সবজিসহ প্রায় সব জিনিসের দামই বাড়ছে। কিন্তু লেবুর দাম দিন দিন কমে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বানিজ্যিকভাবে লেবু চাষে আগ্রহ হারাবে কৃষকরা।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী জানান, বাণিজ্যিকভাবে অনেক কৃষকই লেবু চাষ করেছেন। তাছাড়া বাগানের ছায়াতে কিংবা জমির আইল দিয়ে সাথি ফসল হিসেবেও কৃষকরা লেবু চাষ করছেন। উপজেলায় ২২৫ বিঘা জমিতে চলতি মওসুমে লেবু চাষ হয়েছে। বাজারে আমদানী বেশি হওয়ার কারনে লেবুর দাম বর্তমানে কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।