চকবাজারের আগুনে একে একে ৬ জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্বজনরা। আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে চারপাশ। ফায়ার সার্ভিস জানায়, মৃতরা ছিলেন আগুনের কেন্দ্রস্থল বরিশাল হোটেলের স্টাফ। নাইট ডিউটি করে সবাই ঘুমাচ্ছিলেন হোটেলটির ওপরের পাটাতনে।
বুক ফাটা আর্তনাদ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে। একের পর এক ঢুকছে চকবাজারের অগ্নিকান্ডে উদ্ধার হওয়া মরদেহ। মৃত্যু নিশ্চিত জেনে আগে থেকেই অনেকের স্বজনরা জড়ো হন মর্গের সামনে। মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।
বিল্লাল হোসেন তাদেরই একজন। চকবাজারে অগ্নিকান্ডের সেই ভবনের নিচ তলায় বরিশাল হোটেলে মেসিয়ার হিসেবে চাকরি করতেন তিনি। আগুনের সংবাদ পাওয়ার পর স্বজনরা প্রথমে ভিড় করেন হোটেলের সামনে। তবে ঘটনাস্থলে লাশের মুখ দেখার সুযোগ পাননি তারা।
বিল্লাল হোসেনের ভাই বলেন, ‘ঘুমানোর পর যখন আগুন লাগছে তখন আমাদের বাড়ি থেকে খবর দিয়েছে। তারপর থেকে ফোন দিচ্ছি, কিন্তু মোবাইল বন্ধ।’
বিল্লালের আরেক স্বজন বলেন, ‘যখন লাশ বের করছে তখন একটু মোটাতাজা লাগছে এজন্য আমরা সন্দেহ করলাম। আমাদের ঘনিষ্ঠ লোক, আমরা কীভাবে না চিনে থাকব।’
নিখোঁজ শরিয়তপুরের গোসাইরহাটের ওসমানের স্বজনদেরও এক দশা। রাতের ডিউটি শেষে অন্য ৫ জনের সঙ্গে সেও রেস্টুরেন্টের ওপরে পাটাতন দিয়ে তৈরি জায়গায় ঘুমাতে গিয়েছিল।
ওসমানের স্বজনরা বলেন, ‘উনারা নাম ঠিকানা আর ছবি নিয়েছে। সে দিনে ঘুমাইতো তো আজকে আমাকে দেশের থেকে ফোন দিয়ে বলছে বিল্লালের দোকানে আগুন লাগছে, ওর তো কোনো খোঁজ নেই। পরে এসে অনেক খোঁজাখুঁজি করছি, কোথাও পাইনি।’
চকবাজারের আগুনের ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ৬ জনের মরদেহের কারোরই মুখ দেখে শনাক্ত করার উপায় নেই বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।
ঢাকার ফায়ার সার্ভিস ইন্সপেক্টর ইউনুস আলী বলেন, শরীরগুলো একেবারেই পুড়ে গেছে, তাই তাদের মুখ দেখে একদম চেনার কোনো উপায় নেই। তাই এখন ডিএনএ টেস্ট বা উনাদের দেখে যদি শনাক্ত করতে পারে তাহলে তাদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করার কাজ করবে সিআইডি ফরেনসিক টিম।