নরসিংদীর পলাশে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক নারীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে ঝলসে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়া (৩০) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এতে দগ্ধ ওই নারীর বাঁহাত, পিঠ ও কোমর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সোমবার (১ আগস্ট) দিবাগত রাতে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়াকে গ্রেফতার করে পলাশ থানা পুলিশ।
গ্রেফতার শফিকুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার টাওরা গ্রামের মৃত রহিম মিয়ার ছেলে।
বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে ভুক্তভোগী নারী রত্না আক্তার বাদী হয়ে পলাশ থানায় একটি মামলা করেন।
মামলা সূত্রে ও ভুক্তভোগী রত্না আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সন্তানের জননী ডিভোর্সপ্রাপ্ত ভুক্তভোগী রত্না আক্তার (২৫) তার মেয়েকে নিয়ে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে বাবা মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। চার মাস আগে পার্শ্ববর্তী রূপগঞ্জ উপজেলার পঙ্খী মিয়া বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে বাড়িতে। এরপর শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়ার স্বভাবগত বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেন রত্না ও তার পরিবার। এর পর থেকে পঙ্খী মিয়া বিভিন্ন সময় রাস্তাঘাটে রত্না আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু প্রতিবারই প্রত্যাখ্যান করেন রত্না।
ক্ষিপ্ত হয়ে পঙ্খী মিয়া রত্নাকে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো শুরু করে। সোমবার দিবাগত রাতে বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত রত্না আক্তারের ওপর পঙ্খী মিয়া অ্যাসিড নিক্ষেপ করে। এ সময় রত্না আক্তারের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে বখাটে পঙ্খী মিয়া পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা রত্না আক্তারকে উদ্ধার করে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. আব্দুল আল মামুন জানান, অ্যাসিডে রত্না আক্তারের বাঁহাত ও পিঠসহ কোমরের ১২ শতাংশ ঝলসে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ঘুমন্ত ওই নারীর শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার পঙ্খী মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অ্যাসিড ছোড়ার কথা স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে রত্না আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন।