জাহাজ থেকে নামানো হচ্ছিল ক্লোরিন গ্যাস ভরতি ট্যাঙ্ক। আচমকাই পড়ে যায় একটি ট্যাঙ্ক। তখনই বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে হলুদ ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারদিক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। আশঙ্কাজনক প্রায় আড়াইশো জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২০০ জন।
জর্ডনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শিউরে উঠছেন নেটিজেনরা। জর্ডনের প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করেছেন।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর সওয়া তিনটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। জর্ডনের আকাবা শহর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লোহিত সাগর বন্দরে জাহাজ থেকে ক্লোরিনের কন্টেনার নামানো হচ্ছিল। বন্দরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ক্রেনে করে নামানো হচ্ছিল ক্লোরিনের কন্টেনার। হঠাত্ করে বিকল হয়ে যায় ক্রেনটি। তার ফলেই অনেকটা উচ্চতা থেকে পড়ে যায় ক্লোরিনের ট্যাঙ্ক। তার পরেই বিস্ফোরণ ঘটে। হলুদ ধোঁয়ায় ঢেকে যায় জাহাজ সংলগ্ন এলাকা।
এরপরেই বিষাক্ত ধোঁয়ায় হাসফাঁস করতে থাকেন জাহাজের কর্মীরা। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১৩ জনের। স্থানীয় আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। এক একটি কন্টেনারে প্রায় ৩০ টন ক্লোরিন গ্যাস ভরা ছিল বলে জানা গিয়েছে। ফলে কতখানি বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে মিশেছে, সেই অনুমান করা প্রায় অসম্ভব। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে সিভিল ডিফেন্স ডিপার্টমেন্টের বিশেষ দল। তবে প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, আপাতত ক্লোরিন গ্যাসের বিষক্রিয়া বন্ধ করা গিয়েছে।
এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন জর্ডনের প্রধানমন্ত্রী বিসের-আল খাসাওনেহ। তবে আধিকারিকদের তরফে বলা হয়েছে, ক্রেনের তার ছিঁড়ে গিয়েই বিপত্তি ঘটেছে। তবে ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে নজর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বন্দরের কর্মীদের যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি। চিকিত্সকদের মতে, ক্লোরিনের মতো বিষাক্ত গ্যাস যদি নিশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ঢোকে, তাহলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। দেহের জলীয় পদার্থের সঙ্গে ক্লোরিনের বিক্রিয়া হয়। ফলে অ্যাসিড তৈরি হয় যা দেহের কোষগুলি নষ্ট করে দেয়। সেই কারণেই আশঙ্কা বাড়ছে স্থানীয় আধিকারিকদের মনে।
রাজশাহীর সময়/এএইচ