২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৪৮:৩৩ অপরাহ্ন


সীতাকুন্ডে কোপ দিয়ে কান বিচ্ছিন্ন করা আসামী গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৬-২০২২
সীতাকুন্ডে কোপ দিয়ে কান বিচ্ছিন্ন করা আসামী গ্রেফতার সীতাকুন্ডে কোপ দিয়ে কান বিচ্ছিন্ন করা আসামী গ্রেফতার


চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে পাহাড়ি ছড়ার পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করে এক কোপে কান বিচ্ছিন্ন করা ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী ইব্রাহীম খলিল জিসান অরফে সন্ত্রাসী জিসানকে (২৬) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

মঙ্গলবার (৭ জুন) দিবাগত রাত ১টায় চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবরসাহ থানার বিশ্বকলোনী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার মোঃ ইব্রাহীম খলিল অরফে জিসান। সে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানার ১নং ওয়ার্ড সীতাকুন্ড পৌরসভা মোঃ জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন, র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের মুখপাত্র সিনিঃ সহকারী পরিচালক মোঃ নূরুল আবছার।

তিনি জানান, মোঃ মুছা মিয়ার (৬০) বাড়ির পূর্বপাশে পাহাড়ী ছড়া হতে এলাকার লোকজন কৃষি জমিতে পানি সরবরাহ করতো। এলাকার জনৈক মোঃ নাছির তার নিজের পানির মেশিন দিয়ে ছড়া হতে কৃষি জমিতে পানি সরবরাহ করতো। কিছুদিন পূর্বে পানি দেয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে নাছিরের সাথে এলাকার জনৈক আনোয়ারের ঝগড়া হয়। 

ওই ঝগড়া বিবাদ মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য মুছা মিয়া সহ স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনের উপস্থিতিতে গত (৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত মোঃ ইব্রাহীম খলিল অরপে জিসান ও তার সহযোগীরা মিলে বিষয়টি মিমাংসা হয়নি। এরপর মুছা মিয়া বাড়িতে চলে আসেন। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টায় জিসান ও তার সহযোগী ৮/১০ জন সন্ত্রাসীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মুছা মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তারা তার বসত ঘরের টিন, পানির ট্যাংক ও ডিপমটর ভাংচুর করে। মুছা মিয়া প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা তাকে সহ পরিবারের সদস্যদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। 

এরপর রাত পৌনে ৯টায় মুছা মিয়া তার ভাই নুরুল ইসলাম(৬৫)কে নিয়ে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়ি হতে ফেরার পথে এয়াকুবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌছামাত্র জিসান, রবিউল, আরিফ, আলমগীর এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাদের পথরোধ করে আতর্কিত হামলা করে। এসময় সন্ত্রাসীরা মুছা মিয়াকে মাথা লক্ষ্য করে কোপ দেয়। এতে মুছার মিয়ার বাম কানের মাঝ বরাবর রক্তক্ত হয় এবং ডান কান কেটে চামড়ার সাথে ঝুলে যায়। মুছা মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা লোহার রড ও লাঠি দ্বারা পুরো শরীরে বে-ধড়ক পেটায়। এছাড়া সন্ত্রাসীরা মুছা মিয়ার ভাই নুরুল ইসলামের মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে । 

পরবর্তীতে মুছা মিয়া এবং নুরুল ইসলামের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এরপর আশপাশের লোকজনের সহায়তায় মুছা মিয়ার ছেলে মোঃ সাহেদ বেলাল গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে সীতাকুন্ড উপজেলা স¦াস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ছেলে মোঃ সাহেদ বেলাল বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর আসামীরা আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে। এ ঘটনায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অপরাধিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। 

এরই এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, মামলার ৪নং আসামী মোঃ ইব্রাহীম খলিল অরফে জিসান (২৬) আইন-শৃংঙ্খলা চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবরসাহ থানার বিশ্বকলোনী এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছে। 

এমন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (৭ জুন) দিবাগত রাত ১টায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার আসামীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় বিস্ফোরক, নাশকতা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ৩টি মামলা রয়েছে।

এ ব্যপারে গ্রেফতার আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে বুধবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।