বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলে প্রশান্ত বিশ্বাসকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাসের সশ্রম করাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৬ জুন) খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক তাসনিম জোহরা রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নব কুমার চক্রবর্তী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রশান্ত বিশ্বাস রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রামের প্রফুল্ল বিশ্বাসের বড় ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের সূত্র জানা যায়, প্রফুল্ল বিশ্বাস কৃষিকাজ ও ধর্মীয় গান করতেন। তার দুই ছেলে। একজন দর্জির কাজ করেন এবং অন্যজন ফরিদপুর জেলায় এনজিওর কর্মী হিসেবে কাজ করেন। ছেলেদের দুইজনের কেউ বিয়ে করেনি। বড় ছেলে প্রশান্ত বিশ্বাস বিয়ের জন্য মা-বাবাকে চাপ দিতে থাকে।
এ নিয়ে পরিবারে প্রায়ই কলহ দেখা দিত। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলহ দেখা দেয়। এ সময় মাকে মারতে যায় প্রশান্ত। পরের দিন মা পাশের গ্রামে ভাইয়ের বাড়িতে চলে যায়। ১৬ জানুয়ারি রাতে প্রফুল্ল বিশ্বাস গান গাইতে অকুল পালের বাড়িতে গিয়ে রাত ১১টায় বাড়ি ফিরে আসে।
১৭ জানুয়ারি সকালে দা দিয়ে কুপিয়ে ঘুমন্ত বাবাকে হত্যা করে ছেলে। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালাতে গিয়ে পাশের বাড়ির সুভদ্রা বিশ্বাস প্রফুল্লর গলা কাটা লাশ দেখে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে নিহতের ছোট ছেলে সুশান্ত বিশ্বাস বাদী হয়ে বড় ভাই প্রশান্ত বিশ্বাসকে আসামি করে রূপসা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এদিকে অভিযুক্ত প্রশান্ত বিশ্বাস বাবাকে হত্যা করে ওই দিনই বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে চলে যায়। পশ্চিম বশিরহাটের একটি দোকানে দর্জির কাজ শুরু করে। এরপর সেখান থেকে বনগায়ে গিয়ে কাজ করতে থাকে। ৩ মাস পর বাবার মৃত্যুর বিষয়ে অনুশোচনায় ভুগতে থাকে সে। এরপর দেশে ফিরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
একই বছরের ১২ অক্টেবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক একেএম মাহফুজুল হক প্রশান্ত বিশ্বাসকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রাজশাহীর সময়/এ