২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৫:৩৮:৫৫ অপরাহ্ন


ধানক্ষেতে অজগর, বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দিলেন কৃষক
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৫-২০২২
ধানক্ষেতে অজগর, বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দিলেন কৃষক ধানক্ষেতে অজগর, বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দিলেন কৃষক


লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ধানক্ষেত থেকে আট ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ উদ্ধার করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা। শনিবার (২৮ মে) দুপুরে উপজেলার নওদাবাস ইউনিয়নের মাঠেরগোড় এলাকায় ক্ষেতের ধান কাটতে গিয়ে অজগরটি উদ্ধার করেন হাবিবুর রহমান নামে এক ‍কৃষক।

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এরশাদ আলম জানান, স্থানীয় কয়েকজন কৃষক মিলে সাপটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে থানা পুলিশ ও বন বিভাগে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাপটি উদ্ধার করে। অজগর সাপটি লম্বায় প্রায় ৮ ফুট হবে। এর ওজন ১০ কেজি।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোতাহারুল ইসলাম সময় সংবাদকে জানান, উদ্ধারকৃত সাপটি সুস্থ আছে। তারপরও সেটিকে পর্যবেক্ষণের জন্য ওদাবাস ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে রাখা হয়।

প্রাণীটি সুস্থ থাকায় সংরক্ষিত বনে অবমুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, বন বিভাগের পরামর্শে শনিবার বিকেলে অজগর সাপটিকে স্থানীয় শালবনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, অজগর সাপ র্নিবিষ ও নিশাচর। এটি খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। সাপটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়াবাঁধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, ‍মুরগি, সাপ-কচ্ছপের ডিম, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। এটি তার আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে। সাপটি একবার পেটভরে খেতে পারলে দীর্ঘদিন না খেয়েও থাকতে পারে।

জোহরা মিলা বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

ধানক্ষেতে অজগর যাবার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাহাড় ও বন উজাড় হওয়ার কারণে সাপের আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে গেছে। এতে তাদের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই খাবারের সন্ধানে সাপগুলো লোকালয়ে আসছে।