কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পাঁচ মাসের এক শিশু সন্তানসহ মাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ মে) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করেছে।
শনিবার (২১ মে) সকালে উপজেলার সদর ইউপির নতুন বন্দর গ্রামের একটি ধান ক্ষেত থেকে শিশুর লাশ ও পাশের একটি পুকুর থেকে গলা কাটা অবস্থায় গুরুতর আহত মাকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মায়েরও মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- মা হাফছা আক্তার হারেনা (২৭) ও শিশু ছেলে হাবিব। হাফছার বাড়ি রৌমারী সদর ইউনিয়নের নতুন বন্দর এলাকায়। তিনি ওই গ্রামের আব্দুর রশীদের মেয়ে। তার স্বামীর বাড়ি উপজেলার শৌলমারী ইউপির ওকড়াকান্দা গ্রামে। স্বামীর নাম শাহের আলী।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোন্তাছের বিল্ল্যাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মৃত হাফসা আক্তার হারেনার ভাই হাসে রহমান নুর জানান, দেড় বছর আগে তার বোন হাফসার সাথে একই উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়াকান্দা গ্রামের মৃত বাহাদুরের পুত্র সাহেব আলীর বিয়ে হয়। তাদের ৫ মাস বয়সী একটি প্রতিবন্ধীপুত্র সন্তান রয়েছে। এ অবস্থায় ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন পর স্বামী সাহেব আলী তার স্ত্রী হারেনা ও পুত্র হাবিবকে নতুনবন্দর হাজিপাড়া গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে রেখে দিনমজুরের কাজ করার জন্য টাঙ্গাইল চলে যান।
এদিকে মৃত হারেনার ভাই হাসেনুর আরও জানান, শিশু হাবিবের চিকিৎসা করানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার (১৯ মে) উকিল বাপ জাকির হোসেন জফিয়াল শিশু হাবিব ও মা হারেনাকে সাথে নিয়ে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। পরদিন শুক্রবার ফিরে আসার সময় দুপুর ২টার দিকে মোবাইলে ফোনে তাদের সাথে কয়েক মিনিট কথা হয়েছে। এরপর থেকে তার সাথে আর কোন যোগাযোগ হয়নি। মোবাইল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। এদিক জাকির হোসেন জফিয়ালকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি দাবি করেন, শনিবার সকালে নতুনবন্দর গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি ধানক্ষেত থেকে হাবিবের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। পাশের একটি পুকুর পাড় থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাফছাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত জাকির হোসেন জফিয়াল পলাতক রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোন্তাছের বিল্ল্যাহ জানান, ঘটনার পূর্বাপর অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসাথে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি ঘটনার মোটিভ এবং কে বা কারা ঘটিয়েছে তাদের সনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এছাড়া নিহত হাফসা আক্তার হারেনার মরদেহ সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত থানায় এসে পৌঁছেনি। আসলে তার এবং তার পুত্রের মরদেহ রোববার (২২ মে) ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে বলে আরও জানান তিনি।