করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর বইসহ শিক্ষা উপকরণ বিক্রেতারা। গত বছরের লকডাউনে যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। এরই মধ্যে নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, সম্প্রতি দেশজুড়ে আবারও করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেছে। এতে সরকার দুই সপ্তাহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। তাতে বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে হঠাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় বই ও শিক্ষা উপকরণ বিক্রেতারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
জেলার বই ও শিক্ষাসামগ্রী বিক্রেতারা বলেন, গত লকডাউনে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, যা এখনো কাটিয়ে ওঠা যায়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ব্যবসায় নতুন করে পুঁজি খাটাতে গিয়ে অনেকে ব্যাংক থেকে উচ্চসুদে ঋণ নিয়েছেন। কেউ জমি বিক্রির টাকা ব্যবসায় খাটিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবারও বন্ধ হওয়ায় আমাদের স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে ঋণের দায় মেটাতে গিয়ে ব্যবসা ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। এতে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সাহেব বাজারের রুকসানা বুকস হাউজ মালিক রুহুল আমিন বলেন, লকডাউনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় লাগিয়েছি। খুচরা খাতা-কলমসহ স্টেশনারি মালামাল বিক্রির পাশাপাশি একটি কোম্পানির ডিলার রয়েছে আমার। কিন্তু হঠাৎ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি পাইকারি পণ্যের অর্ডার কমে গেছে। এতে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনের বই বিক্রেতা জনি হায়দার বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেচাকেনা নেই বললেই চলে। শিক্ষার নতুন বর্ষ শুরু হলেও বইয়ের কোনো চাহিদা নেই। আগে জানলে নতুন বছরের বই আমদানি করতাম না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।
বাংলাদেশ পুস্তÍক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনার কারণে দুই বছর লোকসান গুনতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। কিন্তু সরকারি কোনো প্রণোদনা কিংবা সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ বিরাজ করছে।
রাজশাহীর সময় /এএইচ