২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০১:০০:৪৯ অপরাহ্ন


বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েই স্ত্রীকে তালাকের চেষ্টা, অতঃপর...
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৫-২০২২
বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েই স্ত্রীকে তালাকের চেষ্টা, অতঃপর... বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েই স্ত্রীকে তালাকের চেষ্টা, অতঃপর...


যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় লিখন সাকসেনা নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত লিখন সাকসেনা ৪০তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশিদের আদালত শুনানি শেষে লিখন সাকসেনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী স্ত্রীর অভিযোগ, শুরুতে যৌতুকের দাবিতে মারধর করা হলেও বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে লিখন সাকসেনা তাকে তালাক দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে বাধ্য হয়ে স্ত্রী গত ১৪ মে ঢাকার লালবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

লিখন সাকসেনাসহ এ মামলায় আসামি চারজন। বাকি তিনজন হলেন- সাকসেনার বাবা ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবীর, মা শিউলী শ্রাবণী ও ভাই হৃদয় সাকসেনা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে ২০২১ সালের ৪ জুন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী লিখন সাকসেনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীর পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।

স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি থেকে দাবি করা যৌতুকের ১০ লাখ টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা তার স্বামীকে এনে দেন। পরবর্তীতে স্বামী লিখন সাকসেনা ৪০তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন। চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল দুপুরে যৌতুকের টাকার জন্য অভিযুক্তরা বাদী ভুক্তভোগী নববধূ স্ত্রীকে মারধর করে আহত করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ও সাকসেনার স্ত্রী বলেন, যৌতুকের টাকার জন্য লিখন বিভিন্ন সময়ে আমাকে চড়-থাপ্পড়সহ নানাভাবে মারধর করে আসছিল। আমাকে রেখে অন্য মেয়ে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু সংসার টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমি সবকিছু সহ্য করে দুই লাখ টাকা দিই। তবে এখন সে বিসিএস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর আমাকে আর চায় না। সে আমাকে তালাক দিয়ে অন্য কোনো বড়লোক মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। আমি মীমাংসাতে গিয়েও পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করেছি। আমি এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আগানগন ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কিছুই তার জানা নেই। এরপর কল কেটে দেন।

লালবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এ মোর্শেদ মুঠোফোনে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার আসামি লিখন সাকসেনাকে ভৈরবের ছাগাইয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়াও তার দুই ভাইকে আটক করি। তারমধ্যে হৃদয় সাকসেনা মামলার ৪ নম্বর আসামি। এবং তার ছোটভাই অনন্তকে বাদীর বাসার দরজা ভাঙচুরের অভিযোগ পেয়ে আটক করি।

তিনি বলেন, লিখনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হলে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। শুক্রবার (২০ মে) মামলার অপর আসামি হৃদয়কে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।