ইজ়রায়েলি হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার পরিকল্পনা শুরু করল ইরান। কী ভাবে এবং কোথায় কোথায় হামালা চালানো যেতে পারে, তার ছক কষা শুরু করেছে ইরানি সেনাবাহিনী।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের নির্দেশেই সেনা আধিকারিকেরা ইজ়রায়েলে হামলা চালানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন। খুব শীঘ্রই বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশে হামলা চালানো হতে পারে বলে খবর ইরানি সেনা সূত্রে।
গত শনিবার ভোরে দু’দফায় ইরানের রাজধানী তেহরান এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েল। বিমান থেকে ছুটে এসেছিল একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র। হামলায় চার জন ইরানি সেনার মৃত্যু হয়। সেই হামলার পরই নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয় পশ্চিম এশিয়ায়। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানি সেনা ইজ়রায়েলে ‘কঠোর’ হামলার পরিকল্পনা করছে। এক সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, এমন হামলা চালানো হবে, তা ইজ়রায়েল কখনও কল্পনাও করতে পারবে না।
ইজ়রায়েলি হামলার পর প্রথম প্রতিক্রিয়া দিয়ে খামেনেই জানিয়েছিলেন, ইজ়রায়েলি হামলাকে ‘ছোট’ করে দেখতে নারাজ তিনি। তবে সেই হামলার জবাব দেওয়া হবে কী ভাবে, তা স্পষ্ট করেননি খামেনেই। সরাসরি ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার হুমকি থেকে বিরত ছিলেন তিনি। ইজ়রায়েলি হামলায় ইরানে কী কী ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার পরই খামেনেই সেনাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ‘টাইমস অফ ইজ়রায়েল’-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ইজ়রায়েলের কোথায় কোথায় হামলা চালানো যেতে পারে, বর্তমানে তার তালিকা তৈরি করছে ইরানি সেনাবাহিনী। ইজ়রায়েলি গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ইরাকের ভূখণ্ড থেকে হামলা চালাতে পারে তেহরান।
উল্লেখ্য, ইরানের পরিকল্পনার মধ্যেই ইজ়রায়েলে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল হিজ়বুল্লার বিরুদ্ধে। শুক্রবারই লেবানন থেকে উত্তর ইজ়রায়েল লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট হামলা চালানো হয়। সেই হামলায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও হামলা প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি ইরান মদতপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইজ়রায়েল এবং হামাসের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পশ্চিম এশিয়া। শান্তি ফেরাতে আমেরিকার কূটনীতিকেরা ওই অঞ্চলে গিয়েছেন। লেবানন এবং গাজ়ায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকের প্রস্তুতিও চলছে। তার মধ্যেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল। যদিও আমেরিকা আগেই ইরানকে পাল্টা হামলার পথে না হাঁটার জন্য সতর্ক করেছে। ইরান যদি হামলা চালায়, তবে তার জবাব দেওয়ার জন্য ইজ়রায়েলকে সব রকম সাহায্য করবে বলেও জানিয়েছিল আমেরিকা।