রবিবার (২৭ অক্টোবর) ঐতিহাসিক পল্টন ট্রাজেডি দিবস (২৭-২৮ অক্টোবর) উপলক্ষে এক দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে রাজশাহী মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবির। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ সিফাত উল আলম এবং সঞ্চালনা করেন শাখার সেক্রেটারি মোঃ শামিম উদ্দিন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদ।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ সিফাত উল আলম বলেন, ছাত্রলীগের পাশাপাশি আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করা উচিত। রাজনৈতিক শৃঙ্খলা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের অবৈধ কর্মকান্ডের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। ফলে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহিংসতা এবং চাঁদাবাজির মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে, যেন দেশে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। যদি আগামীতে তারা পুনরায় সংগঠিত হয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তাহলে সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনের সহায়তায় তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
সিফাত উল আলম বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ যে নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। সেই দিন সাধারণ মানুষের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয় এবং লাশের ওপর নৃত্য করে নির্মমতা প্রকাশ করা হয়। এমনকি একজন কোরআনের হাফেজকে নির্মমভাবে হত্যা করে তার দাঁত উপড়ে ফেলা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের এই বর্বরতার দৃষ্টান্ত মানবতার জন্য কলঙ্ক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিদ্দিক আহমেদ বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকাসহ সারাদেশে যে নৃশংসতা চালানো হয়েছিল, তার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমের সূচনা ঘটে। সেদিন শহীদ শিপন, শহীদ মুজাহিদ, শহীদ জসিমসহ অনেকেই শাহাদাত বরণ করেন। এভাবে লাশের ওপর নৃত্য করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের নিষ্ঠুরতার প্রকাশ ঘটিয়েছে, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ ব্যতীত বিশ্বের কোনো দেশে এভাবে সাধারণ জনগণের ওপর নৃশংসতা চালানো হয়নি। পিলখানা হত্যাকাÐ, শাপলা চত্বরে গণহত্যা এবং ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, তাদের কর্মকান্ডের সন্ত্রাসবাদী। এই জন্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত। তাদের কাছে যে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে তা শুধু প্রশাসনের কাছেই থাকার কথা, অথচ তারা এসব অস্ত্র ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করেছে।
অনুষ্ঠানের শেষে প্রধান অতিথি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দেশের জন্য শাহাদাত বরণ করা সকল শহীদের জন্য সর্বোচ্চ মর্যাদা ও তাদের পরিবারের ধৈর্যের জন্য প্রার্থনা করেন। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য তিনি দোয়া করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।