চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানাধীন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর গত ০৪ আগস্ট AK-47 অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণের মাধ্যমে হত্যা চেষ্টা মামলার এজাহারনামীয় আসামি যুবলীগ কর্মী সুলাইমান বাদশাকে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭ ও র্যাব-১১ এর যৌথ আভিযানিক দল।
ভুক্তভোগী মোঃ ইমরান হোসেন (২১) চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। সে গত ০৪ আগস্ট ১১টায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানাধীন নিউ মার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে স্লোগান দিতে থাকে।
ছাত্র জনতার কর্মসূচি চলাকালীন এজাহারনামীয় সাবেক একজন কাউন্সিলর এবং অপরাপর আসামিদের সাথে কুখ্যাত যুবলীগ কর্মী সুলাইমান বাদশা অবৈধ অত্যাধুনিক ও বাড়ি অস্ত্র সহকারে ছাত্র জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ এবং বোমা বিষ্ফোরণ ঘটালে ছাত্র-জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে দিক-বেদিক ছুটাছুটি করে পালাতে থাকে। এ সময় ভিকটিম মোঃ ইমরান হোসেন ও তার অন্যান্য সহপাঠীরা দৌড়ে কোতোয়ালী থানাধীন পুরাতন রেল স্টেশনের সম্মুখে রাস্তার উপর পৌঁছালে আসামিগণ ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ মারলে সে কৌশলে তা প্রতিহত করলে তার বাম হাতের দুইটি আঙ্গুল হাড় সহ আংশিক কেটে গুরুতর রক্তাক্ত যখম হয় এবং অপর একটি কোপ তার তলপেটে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে সে মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় অন্যান্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা লাঠিসোটা দিয়ে ভিকটিমকে এলোপাথাড়ি মারধর করে তার কাছে থাকা নগদ ১২০০ টাকা এবং একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে ছাত্র-জনতা ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ওই ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার এফআইআর নং-০৭, তারিখ- ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং, জিআর নং-৩৬৩, ধারা- ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৪/৩২৬/৩০৭/ ৩৭৯/১১৪/৫০৬, দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে , বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি কুখ্যাত যুবলীগ কর্মী সুলাইমান বাদশা নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী থানাধীন নদনা ইউনিয়নের কালুয়াই গ্রামে অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল অদ্য ১৯ সেপ্টেম্বর সাড়ে ৫টায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি সুলাইমান বাদশা, পিতা- আবু তাহের, সাং- কালুয়াই, থানা- সোনাইমুড়ী, জেলা- নোয়াখালী, বর্তমানে- আলফালা গলি, থানা- খুলশী, জেলা- চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি হওয়ার কথা স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালি থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।