১৪ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:৫১:২০ অপরাহ্ন


চট্টগ্রামে ধর্ষণের চেষ্টা ও পর্নোগ্রাফি মামলার মূলহোতা সহ গ্রেফতার - ৩
নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৯-২০২৪
চট্টগ্রামে ধর্ষণের চেষ্টা ও পর্নোগ্রাফি মামলার মূলহোতা সহ গ্রেফতার - ৩ চট্টগ্রামে ধর্ষণের চেষ্টা ও পর্নোগ্রাফি মামলার মূলহোতা সহ গ্রেফতার - ৩


চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের চেষ্টা ও পর্নোগ্রাফি মামলার মূলহোতা সহ তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

ভুক্তভোগী ভিকটিম (৩৭) একজন গৃহিনী এবং স্বামীর মৃত্যুর পর তার সন্তানাদি নিয়ে নিজ পিতার বাড়ি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বসবাস করেন। ভিকটিমের স্বামীর মৃত্যুর পর ভিকটিমের সৎ ছেলে আবছার উল্লাহ ফারুক (৩২) এর সাথে জায়গা জমির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

ওই বিরোধের জের ধরে ভিকটিমের সৎ ছেলে প্রায়শই ভিকটিমকে মারধর সহ সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছিল। ভিকটিমের সৎ ছেলের অত্যাচারে তিনি তার স্বামীর ওয়ারিশ হিসেবে প্রাপ্ত ভবন ভাড়া দিয়ে তার পৈতৃক নিবাস পতেঙ্গায় বসবাস করে আসছেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর ১০টায় ভাড়া দেওয়া বাসার কেয়ারটেকার বাসার পানির লাইন নষ্ট হওয়ায় ভাড়াটিয়াদের সমস্যার কথা মোবাইল ফোনে জানালে ভিকটিম পানির লাইন মেরামত করে দেয়ার জন্য তাকে বলেন। পরবর্তীতে একই তারিখে ওই মেরামত কাজের বিল পরিশোধ এবং বাসার অন্যান্য সমস্যা দেখার জন্য ভিকটিম পতেঙ্গা হতে ডবলমুরিং থানাধীন তার মৃত স্বামীর বাড়ির ২য় তলায় ৭টায় ভাড়াটিয়ার ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় তার সৎ ছেলে আবছার উল্লাহ ফারুক এর স্ত্রী ভিকটিমকে চুলের মুঠি ধরে জোরপূর্বক টেনে হেঁচড়ে তাদের ঘরে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দিলে ভিকটিমের সৎ ছেলে আবছার উল্লাহ ফারুক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং ফারুকের স্ত্রী ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ শুরু করে।

স্ত্রীর দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ভিকটিমের সৎ ছেলে আবছার উল্লাহ ফারুক তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক তাকে বিবস্ত্র করে তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থান সমূহে আঘাত করে শ্লীলতাহানি করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

এ সময় ভিকটিম বাঁচার জন্য আর্তচিৎকার করলে ফারুক তাকে চড়-থাপ্পড় মারে। একপর্যায়ে ভিকটিম বাসা থেকে পালিয়ে আসে।

ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৮/১৭৫, তারিখ- ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) এর ৯(৪)খ/৩০, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ৮(১) তৎসহ ২০১/৩২৩/৩২৪/৫০৬, দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০।

এরই প্রেক্ষিতে মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার ১নং এজাহারনামীয় আসামি চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানাধীন মতিয়ারপুল কাটা বটগাছ এলাকার একটি বাড়িতে অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর পৌনে ৩টায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামি আবছার উল্লাহ ফারুক (৩২), পিতা- মৃত আমিন উল্লাহ, হাসিনা আক্তার (২৮), স্বামী- আবছার উল্লাহ ফারুক এবং  মোঃ মুছা প্রকাশ বালু(৩২), পিতা- মৃত আবুল হাসেম, সর্বসাং- মতিয়ারপুল, কাটা বটগাছ, থানা- ডবলমুরিং, চট্টগ্রামকে গ্রেফতার করে। 

জিজ্ঞাসাবাদে তারা বর্ণিত ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।