বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর বিভিন্ন অপরাধে রাজশাহীর চারঘাটে মামলা হয়েছে ৫টি। মামলায় আসামী করা হয়েছে, আওয়ামীলীগ,যুবলীগ,কৃষকলীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ পদের একাধিক নেতাকর্মীকে। অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে কয়েকশ জনকে। ফলে মামলা দায়েরের পর থেকে চিহিৃত এসব নেতাকর্মীরা বাড়ী-ঘর ছেড়ে রয়েছেন আত্মগোপনে। এ দিকে এসব মামলাকে পুজিকে করে এক শ্রেণীর অস্বাধূ পুলিশ সদস্যসহ কতিপয় কয়েকজন সাংবাদিক নেমেছেন তদবির ও মামলা বানিজ্যে। অভিযোগ উঠেছে কতিপয় সাংবাদিক নিজেদের মত করে তালিকা প্রস্তুত করে মামলা থেকে বাচাঁতে টাকা দাবি করছেন বলে দাবি করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। এরপর থেকে আওয়ামীলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাড়ী-ঘর ছেড়ে চলে যান আত্মগোপনে। ফলে শুরু হয় মানবতা বিরোধী মামলাসহ খুনের একাধিক মামলা। তারই ধারাবাহিকতায় চারঘাটে বিভিন্ন অপরাধে মামলা হয় ৫টি। মামলা গুলোতে আসামী করা হয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারন সম্পাদক ফকরুল ইসলাম,যুগ্ম সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুল হাসান মামুন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন, সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র একরামুল হক, ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুন তুষার, সাধারন সম্পাদক রায়হানুল হক রানা, সরদহ ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান মধু, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, ভায়ালক্ষিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ, ইউসুফপুর ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মাখনসহ আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পদের একাধিক নেতাকর্মীকে। অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে কয়েকশজনকে। এসব মামলা থেকে বাচঁতে ও জনরোষের শিকার থেকে রক্ষা পেতে এসব নেতাকর্মীরা রয়েছেন আত্মগোপনে। অপর দিকে এসব মামলাকে পুজি করে এক শ্রেণীর অস্বাধূ পুলিশ সদস্য ও চারঘাটের কতিপয় কয়েকজন সাংবাদিক মাঠে নেমেছেন মামলা বানিজ্যে। নিজেদের মত করে কয়েকটি তালিকা প্রস্তুত করে কয়েকজন সাংবাদিক আওয়ামীলীগ ঘরোনার কয়েকজনকে ব্যাক্তিকে মামলা থেকে রক্ষা করে দেয়ার নাম করে দাবি করছেন টাকার। টাকা দিলে মামলা থেকে নাম বাদ দেয়া হবে বলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন কতিপয় সাংবাদিক বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কয়েকজন ব্যাক্তি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, কম্পিউটার থেকে একটি তালিকা বের করে চারঘাটের কতিপয় সাংবাদিক কয়েকজনকে ফোন করে জানান তাদের বিরুদ্ধে চারঘাট থানায় মামলা হয়েছে। আমার সঙ্গে পুলিশ আছে। মামলা থেকে রক্ষা পেতে চাইলে যোগাযোগ করেন মামলা থেকে আপনার নাম বাদ দেয়া যাবে। কতিপয় ওই সাংবাদিকের এমন প্রতিশ্রæতি দিলে ভুক্তভোগীরা যোগাযোগ করলে দাবি করা হয় টাকার। তবে সন্দেহ দেখা দেয়ায় পরে থানায় যোগাযোগ করা হলে জানা যায় তাদের নামে মামলা হয়নি। এভাবে উপজেলা জুড়েই চলছে মামলা বানিজ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা এ প্রতিবেদককে জানান কতিপয় পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে কয়েকজন কতিপয় সাংবাদিক কয়েকজনকে এভাবে ফোন করে মামলা হয়েছে বলে জানায়। পরে যাদের কাছে ফোন করা হয়েছিল তারা আমার কাছে আসলে জানতে পারি তাদের বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা হয়। অবৈধ পন্থায় টাকা কামানোর জন্যই কতিপয় সাংবাদিক এমন কর্মকান্ড চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমন খবর শুনেছি। তবে কেউ কোন ধরণের অভিযোগ করেনি। কেউ মামলা নিয়ে বানিজ্য করলে তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওসি সিদ্দিকুর রহমান।