রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেনের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সাধারণ শ্রমিকরা। বুধবার দুপুরে শ্রমিক দিবসে নগরীর সিরোইল বাস টার্মিনালের সামনের সড়ক অবরোধ করা হয়।
কয়েকশ শ্রমিক বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হামিদুল আলম সাজু শ্রমিক বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন।
শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে নগরীর প্রধান এই সড়কটিতে দুই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় রাজশাহী সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রতিনিধি পাঠিয়ে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের টাকা উদ্ধারে সহায়তার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন।
মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সভাপতি হামিদুল আলম সাজু সমাবেশে বলেন, রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন দীর্ঘদিন থেকে শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। তার কাছে শ্রমিকদের ৪ কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। তাকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও শ্রমিকদের অর্থ ফেরত না দেওয়ায় তারা বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন। পাওনা তারা টাকা ফেরত না পেলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন।
এদিকে গত কয়েক বছর ধরেই রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাবের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ হয়ে আসছে। এর আগে ২০২২ সালে মোটর শ্রমিকরা সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন মাহাতাবের বিরুদ্ধে। তখনো অভিযোগ ছিল টাকা আত্মসাতের।
এদিকে বুধবারের সমাবেশে শ্রমিকরা অভিযোগে বলেন, প্রতিদিন রাজশাহীর মিনিবাস থেকে আঞ্চলিক কমিটির নামে প্রায় দুই শতাধিক গাড়ি থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। ঢাকাগামী লোকাল গাড়ি থেকে ৩১০ টাকা করে তোলা হয়; কিন্তু খাতায় জমা হয় মাত্র ১০০ টাকা। ঢাকাগামী কোচ থেকে প্রতিদিন এক হাজার টাকা করে আদায় করা হলেও ইউনিয়নের জমার খাতায় তোলা হয় না। রাজশাহীর বাইরে বগুড়া ও রংপুর অঞ্চলের গাড়ি প্রতি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা তোলা হলেও জমা হয় না।
১০১ জন শ্রমিকের নামে ৩০ টাকা করে তোলা হয় প্রতি গাড়ি থেকে। সেখানে জমার খাতায় যোগ হয় মাত্র ২০ টাকা করে। এভাবে হিসাব করে দেখা গেছে মাহাতাবের কাছে শ্রমিকদের ৪ কোটি টাকার বেশি টাকা রয়েছে। এসব টাকায় মাহাতাব হোসেন বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। শ্রমিকদের চাঁদার টাকায় মাহাতাব দাবি প্রাইভেট কারসহ ৪-৫টি বড় গাড়ির মালিক হয়েছেন।
চলতি মাসের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ না হলে শ্রমিকরা গাড়ি বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচি দেবেন বলে সমাবেশ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন বলেন, শ্রমিক খাতে তোলা টাকা শ্রমিক কল্যাণে ব্যয় করা হয়েছে। কিছু শ্রমিক অভিযোগ করছেন কিন্তু অভিযোগ সঠিক নয়। সূত্র: যুগান্তর