তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে রাজশাহীর বাঘায় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করে নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার শাহদৌলা সরকারি কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে খোলা আকাশের নিচে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
এ দিন সকালে নানা বয়সী মানুষ নামাজের জন্য মাঠে হাজির হন। নামাজের ইমাম প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশে নিয়মকানুন বলেন। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে প্রচণ্ড গরম, তীব্র তাপপ্রবাহ ও খরা থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি চেয়ে মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে মোনাজাত করা হয়।
নামাজে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু, বাঘা পৌরসভার মেয়র জেলা আ'লীগের অন্যতম সদস্য মোঃ আক্কাছ আলী, বিশিষ্ট সমাজ সেবক সাবেক বাজুবাঘা ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন, বাঘা মোজাহার হোসেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নসিম উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সানোয়ার হোসেন সুরুজ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সততা ফার্নিচার গ্যালারির স্বত্বাধিকারী হাচানুর আলম মৃদুলসহ স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবী মুসল্লিগণ।
নামাজে ইমামতি করেন বাঘা শাহী মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আশরাফ আলী। এ সময় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তিনি বলেন, বৃষ্টি কামনা করে এই নামাজের আয়োজন করা হয়। বৃষ্টি হলে দোয়া কবুল হয়েছে, বৃষ্টি না হলে দোয়া কবুল হয়নি এমনটি ভাবার সুযোগ নেই। আমরা যদি আল্লাহর কাছে ফিরতে পারি, তওবা করতে পারি, চাইতে পারি- এটাই হচ্ছে আমাদের সফলতা।
উল্লেখ্য, রাজশাহীতে গত ৪ এপ্রিল থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। মৃদু, মাঝারি, তীব্র হয়ে অতি তীব্র পর্যন্ত উঠেছে তাপপ্রবাহ। গত ১৭ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়।
আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ দশমিক ৯ পর্যন্ত থাকলে তা তীব্র তাপপ্রবাহ। সোমবার দুপুর ১২টায় রাজশাহীর তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহীতে সর্বশেষ গত ২ এপ্রিল ৬ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তারপর আর বৃষ্টির দেখা নেই।
এখন তীব্র তাপদাহে পুড়ছে ফসলের খেত, ঝরে পড়ছে গাছের আম আর লিচু। তীব্র খরার কারণে চাপ কলে পানি না ওঠায় গরমের কারণে হাঁসফাঁস করছে প্রাণ। এই তাপদাহের ভেতর পানির জন্য কাহিল হয়ে উঠেছে জনজীবন। এ তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি অনিবার্য হয়ে উঠেছে। বৃষ্টি নামলেই তাপদাহ কমবে। তাই সবাই প্রত্যাশা করছেন একটু বৃষ্টির। বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) সাহাবিদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করতেন। সে জন্য তারা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপের জন্য তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন।