ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত 'বিশ্ব বই দিবস' উপলক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বইপাঠ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়-ভিত্তিক শিল্প-সাহিত্যের সংগঠন জ্ঞানচক্র।
'জ্ঞানের আলো জালাই কূপমন্ডুকতা তাড়াই' এই স্লোগানকে সামনে রেখে র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড ঘুরে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। এরপর শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা বইপাঠ কর্মসূচি পালন করে। কাঁচা মুদ্রার এই পুঁজিবাদী বিশ্বে বইপাঠের মতো একটি সৃজনশীল কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতেই উক্ত আয়োজন করে সংগঠনটি।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহির ইসলাম বলেন, 'জ্ঞানচক্র' ক্যাম্পাসভিত্তিক শিল্প সাহিত্য জ্ঞান-বিষয়ক সংগঠন। আমরা সাপ্তাহিক একটা আড্ডা দেই সেখানে টপিক অনুযায়ী বিভিন্ন রকম বই পড়ে থাকি। বিশ্ব জ্ঞানকাণ্ডের মহৎ মনীষা এবং বিজ্ঞ পণ্ডিতদের নিয়ে আমরা আলোচনা করে থাকি। আজ 'বই দিবস' উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বই পাঠ কর্মসূচি আয়োজন করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী হোসেন বলেন, 'জ্ঞানচক্র' থেকে আয়োজিত কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা বই পড়ার অনুপ্রেরণা পাই। সেখানে বিভিন্ন দার্শনিক, কবি-লেখকদের জীবনী সম্পর্কে জানতে পারি এবং তাঁদের বই নিয়ে আলোচনা করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার বলেন, বই পড়ার মাধ্যমে আমাদের কুসংস্কারগুলো দূর হয়ে যাবে এই কামনা। শরীর সুস্থ রাখার জন্য যেমন স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন, ঠিক তেমনিভাবেই ব্রেন তথা মস্তিষ্ককে সুস্থ, কার্যক্ষম ও সচল রাখার জন্য খাদ্য দেওয়া প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণা জানাচ্ছে, বই পড়ার অভ্যাসটিই হলো মস্তিষ্কের খাদ্য।
উল্লেখ্য, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর ১৯৯৫ সালে প্রথমবার বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব বই দিবস। যদিও ১৯২৩ সাল থেকে প্রতিবছর ২৩ এপ্রিল স্পেনে পালিত হয়ে আসছিল বই দিবস। বই দিবসের মূল ধারণা আসে স্প্যানিশ লেখক ভিসেন্ত ক্লাভেল আন্দ্রেসের কাছ থেকে।
১৬১৬ সালের ২৩ এপ্রিল মারা যান স্পেনের আরেক বিখ্যাত লেখক মিগেল দে থের্ভান্তেস। আন্দ্রেস ছিলেন তার ভাবশিষ্য। নিজের প্রিয় লেখককে স্মরণীয় করে রাখতে ১৯২৩ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে আন্দ্রেস স্পেনে পালন করা শুরু করেন বিশ্ব বই দিবস। এরপর ১৯৯৫ সালে ইউনেস্কো দিনটিকে বিশ্ব বই দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং পালন করতে শুরু করে। সে থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর ২৩ এপ্রিল বিশ্ব বই দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।