২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:৩৭:১৩ অপরাহ্ন


রাজশাহী মহানগরীতে ভুয়া ৩ সেনা সদস্য গ্রেপ্তার
মাসুদ রানা রাব্বানী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৪-২০২৪
রাজশাহী মহানগরীতে ভুয়া ৩ সেনা সদস্য গ্রেপ্তার রাজশাহী মহানগরীতে ভুয়া ৩ সেনা সদস্য গ্রেপ্তার


রাজশাহী মহানগরীতে ভুয়া তিন সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়া কথা বলে টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারণা চক্রের সদস্য। 

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টায় বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ বর্ণালীর মোড় থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৯টি ভুয়া নিয়োগপত্র, সেনাবাহিনীতে যোগদানের পূর্বে মেডিকেলের জন্য প্রত্যয়নপত্রের ফটোকপি, আসামির স্বাক্ষরকৃত ফাঁকা চেক, সেনাবাহিনীর নকল পরিচয়পত্র ও নগদ ২০ হাজা টাকা উদ্ধার হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- মো: রবিন ইসলাম (২২), মো: আব্দুল হাকিম (২২) ও মো: আব্দুর রহিম (২৫)। রবিন ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার পীড়াশন গ্রামের মো: রবিউল ইসলামের ছেলে, হাকিম একই থানার নিমতলা গ্রামের হেফাজ উদ্দিনের ছেলে ও আব্দুর রহিম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ইসলামপুর গ্রামের হারুন-অর-রশিদের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মোঃ জামিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার চন্দনা গ্রামের আব্দুল আজিজের দুই ভাই ও তার শ্যালক বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনীর চাকরি জন্য লাইনের দাঁড়ায় কিন্তু চাকরি হয় না। এই সুযোগে আসামিরা তাদের বাড়িতে গিয়ে জানায় সেনাবাহিনীর বড় অফিসারদের সাথে তাদের পরিচয় আছে। টাকা দিলে চাকরি নিয়ে দিতে পারবে। এসময় আসামি রবিন নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর, আব্দুর রহিম লে: কর্নেল এবং হাকিম ক্লাক  পরিচয় দেয়। এদিকে রবিনের বাবা মাও বিভিন্ন ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রলোভন দেয় এবং টাকা প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদান করে। ২০২৩ সালে আসামিদের সঙ্গে আজিজের দুই ভাই ও তার শ্যালকের চাকরির জন্য ২৫ লক্ষ ৭ হাজার টাকার একটি মৌখিক চুক্তি হয়। এসময় আসামি হাকিম তার স্বাক্ষর করা একটি ফাঁকা চেক প্রদান করে। কয়েক দিন পর আসামিরা এসে ঐ তিন জনের চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। পরবর্তীতে গত ২৩ জুলাই বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ বর্ণালী মোড়ে আসামিরা আজিজকে তিন জনের চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে। তখন আজিজ তাদের ১২ লক্ষ প্রদান করেন এবং পরে অবশিষ্ট ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। আজিজের এলাকার যারা চাকরি পেয়েছে তারা প্রশিক্ষণে চলে যায়। কিন্তু তার ভাই ও শ্যালকের নাম না আসায় আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখন আসামিরা তাকে প্রশিক্ষণের তারিখ পরিবর্তন করে পুনরায় নিয়োগপত্র প্রদান করে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে এবং ১৭ এপ্রিল রাজশাহীতে আসতে বলে। তাদের এধরনের কার্যক্রম সন্দেহজনক মনে হলে তারা এলাকায় খোঁজখবর নেয়। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন  তারা ছাড়াও গ্রামের আরও পাঁচ জনের কাছ থেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৪০ লক্ষ প্রতারণা করে আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি আব্দুল আজিজ রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা অফিসে মৌখিকভাবে জানায়।

এমন সংবাদের ভিত্তিতে ১৭ এপ্রিল রাত সাড়ে ৭টায় রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) কে. এম. আরিফুল হক, বিপিএম, পিপিএম-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ড. মো: রুহুল আমিন সরকারের নেতৃত্বে  ডিবি পুলিশের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ বর্ণালীর মোড় থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। এসময় আসামিদের কাছ থেকে ৯টি ভুয়া নিয়োগপত্র, সেনাবাহিনীতে যোগদানের পূর্বে মেডিকেলের জন্য প্রত্যয়নপত্রের ফটোকপি, আসামির  স্বাক্ষরকৃত ফাঁকা চেক, সেনাবাহিনীর নকল পরিচয়পত্র ও নগদ ২০ হাজা টাকা উদ্ধার হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সহযোগী অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আরএমপি'র বোয়ালিয়া থানায় মামলা রুজু করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।