হুইলচেয়ারেই বন্দি জীবন। এয়ারস্ট্রাইকে এক হাত, পা ও চোখ হারিয়েছেন। প্রতিবন্ধী হয়েই জীবন কাটে। কিন্তু বুদ্ধি ক্ষুরধার। মগজে কূটনীতি আর ষড়যন্ত্রের হাওয়াবাতাস খেলে। এনার নৃশংসতা বলে বোঝানোর নয়। মৃত্যু আর রক্ত দেখতেই ইনি অভ্যস্ত। হামাসের এই মাস্টারমাইন্ড কমান্ডারই ইজরায়েলের ত্রাস। এঁকেই হন্যে হয়ে খুঁজছে ইজরায়েলি সেনা। ইজয়ারেলের গোয়েন্দা দফতর মনে করছে, এই হামাস কম্যান্ডারই হুইলচেয়ারে বসে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর ষড়যন্ত্রেই ২০২১ সালে ইজরায়েলে নাশকতায় প্রায় ১২০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
নাম মহম্মদ দেইফ। ১৯৬৫ সালে গাজার খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্ম। আসল নাম ছিল মহম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম মাসরি। হামাসে যোগদান ১৯৯০ সালে।যাযাবর জীবনযাপনের জন্য পরবর্তীকালে নাম হয় মহম্মদ দেইফ (দেইফ শব্দের অর্থ আরবি ভাষায় অতিথি)।
১৯৯৫ সাল থেকে ইজরায়েলি সেনা ও সামরিক বাহিনীর অফিসারদের হত্যাকাণ্ডের জন্য ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় নাম ওঠে দেইফের। ইজরায়েলে বিভিন্ন সময়ে নাশকতার মূল চক্রী ছিলেন এই মহম্মদ দেইফ। তাঁকে হত্যার চেষ্টাও কম হয়নি। গত দুদশকে মোট সাতবার হত্যার চেষ্টা হয় দেইফকে। প্রত্যেকবারই বেঁচে যান তিনি। ইজরায়েলি বাহিনীর এয়ারস্ট্রাইকে একটা চোখ, এক হাত ও এক পা হারান। তারপর থেকে হুইলচেয়ারেই বন্দি এই দুর্ধর্ষ জঙ্গি। প্রতিবন্ধী হয়েও হামাসের সমস্ত যুদ্ধ কৌশলের তিনিই নেতৃত্ব দেন বলে ইজরায়েলি গোয়েন্দাদের ধারণা।
প্যালেস্তাইনের সঙ্গে ইজরায়েলের সংঘাতের ইতিহাস নতুন নয়। ১৯৪৮ সালে ইজরায়েল রাষ্ট্র গঠনের গোড়ার দিন থেকেই এই লড়াই চলছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গাজা স্ট্রিপের দখল নিয়ে ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী ও প্যালেস্তাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের সংঘাত আগেও হয়েছে। তবে এবারের যুদ্ধ আরও ভয়ঙ্কর।