ইজরায়েল ও হামাস বাহিনীর যুদ্ধে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। এই যুদ্ধে গত তিন-দিনেই ইজরায়েলের ৭০০-র বেশি নাগরিকের প্রাণ গিয়েছে। অনেকে অপহৃত হয়েছেন। হামাস বাহিনীর অতর্কিত হামলা মোকাবিলায় লড়াই চালাচ্ছে ইজরায়েল। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই তাত্পর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে ইজরায়েলের শিক্ষা ব্যবস্থা।
বিশ্বের মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় সেরা দেশ হিসাবে ইজরায়েলের নাম উঠে আসে। এর অবশ্য বিশেষ কারণ রয়েছে। ইজরায়েলে শিক্ষা ব্যবস্থার একটি অংশ হল, ছাত্রছাত্রীদের সেনা প্রশিক্ষণ।
কেবল শিক্ষা ব্যবস্থা নয়, ইজরায়েলের ইতিহাস, ধর্ম, ভৌগোলিক অবস্থান, প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং সর্বোপরি সেনাবাহিনী গোটা বিশ্বে আলোচনার অন্যতম বিষয়। তাই গোটা বিষয়ে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করতে ভারতের এক কূটনীতিক ইজরায়েলে গিয়েছিলেন বলেও সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে ভারতের এক কূটনীতিক ইজরায়েলের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে সেই দেশে যান। তার প্রেক্ষিতেই কেন বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ইজরায়েলের শিক্ষা ব্যবস্থা ভাল জানা যাক…
ইজরায়েলের শিক্ষা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
১) এআই ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা- তথ্য পরিসংখ্যান ও আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)-এর সহায়তায় দীর্ঘ সময় ধরেই ইজরায়েল উদ্ভাবন ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করছে। দীর্ঘদিন ধরেই ইজরায়েলের অধিকাংশ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কোর্সের একটি অংশ হল এআই প্রশিক্ষণ।
২) সেনা প্রশিক্ষণ জরুরি- ইজরায়েলের শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী, সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের সেনা প্রশিক্ষণ নেওয়া জরুরি। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী ইজরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF)-র সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। বিশ্বের কঠোরতম সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে IDF। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সপ্তাহের প্রথম দিন হিসাবে রবিবার এবং সোমবার থেকে সম্পূর্ণ উদ্যমের সঙ্গে কাজের দিন শুরু হয় বলে গণ্য করে ইজরায়েল।
৩) শিক্ষায় সরকারি তহবিল- শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রকল্প এবং পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষা দিতে সাহায্য করে ইজরায়েল। প্রয়োজনে যে কোনও শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দিতে আর্থিক সহায়তাও করা হয়। সরকার ও বেসরকারি এজেন্সিগুলি পৃথকভাবে এব্যাপারে কাজ করে।
৪) স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক- ইজরায়েলে ৬ বছর বয়স থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত প্রত্যেকের স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক। সাধারণভাবে প্রাথমিক স্কুল হয় প্রথম শ্রেণি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত। তারপর ইন্টারমিডিয়েট স্কুলে সপ্তম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি এবং সেকেন্ডারি স্কুলে দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। যদিও প্রাথমিক শিক্ষার পর স্কুল পড়ুয়ার ৯ শতাংশ বোর্ডিং স্কুলে চলে যায়।
৫) কেবল পুঁথিনির্ভর জ্ঞানের জন্য স্কুল নয়- ইজরায়েলের শিক্ষা ব্যবস্থার বিশেষ বিষয় হল যে, কেবল পুঁথিনির্ভর জ্ঞান দেওয়ায় বিশ্বাসী নয় স্কুলগুলি। শিক্ষার্থীদের সে দেশের সেচের বিষয়েও জানানো হয়। বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পরীক্ষায় বসানো হয়। অন্যান্য দেশ সম্পর্কে অবহিত করতে বিভিন্ন দেশের ইতিহাস, ভূগোলও পড়ানো হয়।