২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৯:২৫:০৬ অপরাহ্ন


জিতনা আবাদি, উতনা হক’ মন্তব্যের পালটা দিলেন মোদি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১০-২০২৩
জিতনা আবাদি, উতনা হক’ মন্তব্যের পালটা দিলেন মোদি জিতনা আবাদি, উতনা হক’ মন্তব্যের পালটা দিলেন মোদি


সংখ্যালঘুর অধিকার প্রশ্নে এবার কংগ্রেসের মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই বাজিমাত নরেন্দ্র মোদির। বিহারে জনগণনার প্রেক্ষিতে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে বেশি অধিকারের যে সমীকরণ টেনেছেন রাহুল গান্ধী, সেই ‘জিতনা আবাদি, উতনা হক’ মন্তব্যের পালটা দিলেন মোদি। আর তার জন্য রাহুলের পূর্বসূরি আরেক কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিং-এর মন্তব্যকেই টেনে আনলেন তিনি। ২০০৬ সালে মনমোহন সিং বলেছিলেন, সংখ্যাগুরু নয়, দেশের সম্পদের উপর প্রথম অধিকার থাকা উচিত সংখ্যালঘুরই। তাহলে কি অধিকার প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান বদলাচ্ছে হাত শিবির?- এই মর্মেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এবার আক্রমণ শানালেন মোদি।

লোকসভা ভোটের আগে বারে বারেই জাতিগত জনগণনা ইস্যুতে মোদি সরকারকে নিশানা করেছেন রাহুল গান্ধী। মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়ার সময়েও কংগ্রেসের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, জাতিভিত্তিক আদমশুমারি না হলে কীভাবে এই বিল বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে। আর সম্প্রতি বিহারের জাতিগত জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরেই এই ইস্যুতে নতুন করে সরব হয়েছেন রাহুল। আসলে আসন্ন জনগণনায় তফসিলি জাতি ও উপজাতি ছাড়া আর কোনও জাতপাতের উল্লেখ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। মুসলিমদের সুবিধা দিতে নারাজ বলেই এহেন মনোভাব বিজেপির, এমনটাই দাবি বিরোধীদের। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের আপত্তি উড়িয়েই নিজের রাজ্যে জাতিগত জনগণনার ব্যবস্থা করেছিলেন নীতিশ কুমার, যার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, রাজ্যের ৬৩ শতাংশ মানুষই অনগ্রসর শ্রেণি সম্প্রদায়ের। এ ছাড়াও তফসিলি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন ১৯ শতাংশ মানুষ।

সেই প্রসঙ্গেই কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি বলেন, যত বেশি জনসংখ্যা তত বেশি অধিকার। আর সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই এবার কংগ্রেসকে পালটা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর সাফ দাবি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিমদের অধিকার সুনিশ্চিত করার কথা বলেছিলেন, কংগ্রেস সে কথারই বিরোধিতা করছে। উলটে সংখ্যালঘুদের অধিকার কমানোর পক্ষেই কংগ্রেস সওয়াল করছে কি? তাহলে কি সংখ্যাগুরু হিসেবে হিন্দুদেরই সমস্ত অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া উচিত? এমনই প্রশ্নে বিরোধীদের কটাক্ষ করেছেন মোদি।

বস্তুত, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অনেকেই মনে করছেন, ‘জিতনা আবাদি, উতনা হক’ কথাটির মধ্যে ভুল বার্তা যাওয়ার অবকাশ রয়েছে। বিহারে ৮২% মানুষ অনগ্রসর বা তফসিলি সম্প্রদায়ের, তবুও তাঁরা বঞ্চিত- এই মর্মেই এ কথা বলা হয়েছে, কংগ্রেস এমন দাবি করতেই পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে এই প্রশ্ন উঠবেই যে, দেশের যে উপজাতি বা জাতিগুলোর জনসংখ্যা খুব কম, তাদের কি তবে অধিকার কমে যাবে? সে কথা তো ‘সংখ্যাগুরুর অধিকার’-কেই চাপিয়ে দেওয়ার অ্যাজেন্ডাকে সমর্থন করে বসবে। বিরোধীরা যদি দাবি করেন যে, বিজেপি সংখ্যাগুরুর অধিকারকে গুরুত্ব দিতেই জনগণনায় অনগ্রসর শ্রেণির উল্লেখ রাখছে না, তাহলে এই কথাটিও বিজেপির সেই অবস্থানের দিকেই যাচ্ছে। সেই ফাঁকেই এবার কংগ্রেস শিবিরকে পালটা মাত দিলেন নরেন্দ্র মোদি।