করোনা তো ছাড়, বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে স্প্যানিশ ফ্লুয়ের (Spanish Flu) থেকেও ভয়ঙ্কর মহামারি (Pandemic)। এমনটাই আশঙ্কা ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। ইতিমধ্যেই তারা নতুন এই প্যাথোজেন নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization) ওয়েবসাইটেও 'প্রায়োরিটি ডিজিজে'র তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ডিজিজ এক্স (Disease X)।
স্প্যানিশ ফ্লু-তে বিশ্বের কমপক্ষে ৫ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ডিজিজ এক্স তার থেকেও কয়েক গুণ বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে। ব্রিটিশ গবেষকদের আশঙ্কা, যদি এই নতুন প্যাথোজেন ছড়িয়ে পড়ে, তবে তা এমন মহামারির আকার নেবে যা আগে কখনও হয়নি। বিশ্বের জনসংখ্য়া অনেকটাই কমে যেতে পারে, এতটাই মারণ এই প্যাথোজেন।
২০১৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের সবথেকে উদ্বেগের যে রোগের তালিকা প্রকাশ করেছিল, তাতেও বর্তমানে শীর্ষে রয়েছে ডিজিজ এক্স। এরপরে রয়েছে ইবোলা ভাইরাস, মার্স, সার্স, নিপা, জ়িকার মতো অতি সংক্রামক রোগ, যার মৃত্যুহারও অনেক বেশি।
কী এই ডিজিজ ‘এক্স’?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, এই ডিজিজ এক্স হল আন্তর্জাতিক এপিডেমিক যা অজানা প্য়াথোজেন থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং কোটি কোটি মানুষকে সংক্রামিত করতে পারে। এই প্যাথোজেন কোনও ভাইরাসও হতে পারে বা ব্যাকটেরিয়াম কিংবা ফাঙ্গাস বা ছত্রাক হতে পারে। একাধিক গবেষক ও বিজ্ঞানীরা এই অজানা প্যাথোজেন নিয়ে সতর্কতা জারি করেছেন। এই প্যাথোজেন সম্পর্কে আরও জানতে গবেষণার প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তারা। যদি দ্রুত এই প্যাথোজেন সম্পর্কে না জানা যায়, তবে ভবিষ্যতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা প্রতিরোধ অসম্ভব হয়ে উঠবে বলেই জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের এগজেকিউটিভ ডিরেক্টর ডঃ মাইকেল রায়ান।
কী মত বিশেষজ্ঞদের?
সম্প্রতিই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল-কে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে ব্রিটেনের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের প্রাক্তন কর্তা কেট বিংহ্যাম জানান, ডিজিজ এক্স ১৯১৯-২০ দশকের স্প্য়ানিশ ফ্লুয়ের মতো বা তার থেকেও ভয়ঙ্কর হতে পারে। তিনি বলেন, “১৯১৮-১৯ সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারিতে কমপক্ষে ৫ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বিশ্বজুড়ে, যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মৃতের সংখ্যার দ্বিগুণ। বর্তমানে যে ভাইরাসগুলি রয়েছে, তা মহামারির রূপ নিলে ওই সম সংখ্যক মানুষের মৃত্য়ু হতে পারে। সেদিক থেকে বলতে গেলে আমরা করোনার ক্ষেত্রে কপালজোরে রক্ষা পেয়েছি। করোনায় ২ কোটি বা তার বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যদি ডিজিজ এক্স ইবোলার মতো সংক্রামক হয়, তবে গোটা বিশ্বে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে বেশিদিন সময় লাগবে না।”
এখনও অবধি করোনার উত্পত্তি নিয়েই ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে ডিজিজ এক্স নিয়ে সতর্কতা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।