পৃথিবীতে এমন অনেক জায়গা আছে, সেগুলোর কথা শুনলে অবাক হতে হয়। এই জায়গাগুলো দেখলে মনে হবে যেন অন্য জগতে চলে এসেছি আমরা। আজ এই প্রতিবেদনে এমন একটি জায়গা সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়।
এটি এমন রহস্যময় একটি হ্রদ বা লেক, যেখানে পশুপাখি তো বটেই, মানুষও পাথর হয়ে যায়।
এই হ্রদ উত্তর তানজানিয়ার এনগোরনগোরোতে অবস্থিত। এখানকার স্থানীয় লোকজন এই হ্রদটিকে অভিশপ্ত মনে করেন। তারা বিশ্বাস করেন যে, এই হ্রদটি শয়তান তৈরি করেছে, তাই এই হ্রদে যদি কোনও মানুষ বা প্রাণী যায় তবে তারা পাথরে পরিণত হয়। এই হ্রদটি সারা বিশ্বে ন্যাট্রন লেক নামে পরিচিত। এর জল সম্পূর্ণ লাল দেখায়। মনে হয় যেন রক্ত বইছে। এই লেকের জল দেখে পর্যটকরা ভয় পেয়ে যায় এবং সূর্যাস্তের পর কেউ এর পাড়ে ঘোরাঘুরি করতে সাহসও পায় না।
২০১৩ সালে, যখন বিখ্যাত বন্যপ্রাণী ফটোগ্রাফার নিক ব্র্যান্ড এই হ্রদের কাছে ন্যাট্রনে পৌঁছেছিলেন, তখন তিনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তাঁর মনে হয়েছিল যেন এই হ্রদটি অন্য বিশ্বের শক্তি দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এই জায়গার ছবি তোলার পর নিক যখন তা ইন্টারনেটে পোস্ট করেন, তা সারা বিশ্বে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর সারা বিশ্বের মানুষ ও বিজ্ঞানীরা এই হ্রদে পৌঁছতে শুরু করেন।
এই হ্রদটিকে যা এত মারাত্মক করে তোলে, তা হল এর জল। আসলে, এই হ্রদের জলের পিএইচ (pH) মান প্রায় ১২। অর্থাত্, সহজ কথায়, এটি হুবহু ঘরে তৈরি ব্লিচিং পাউডারের মতো। এর পাশাপাশি এই হ্রদের জলে সোডিয়াম কার্বনেট এবং নাইট্রোকার্বনেটের মতো উপাদান পাওয়া যায়, যা এই হ্রদের জলকে মারাত্মক লবণাক্ত করে তোলে। এই কারণেই এই হ্রদে যে কোনও প্রাণী গেলে মারা যায় এবং তার দেহ এতে জমে যায়।