২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৭:০৪:৫৭ অপরাহ্ন


সাগরের ওপর রানওয়ে নির্মাণ শেষের দিকে
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৩
সাগরের ওপর রানওয়ে নির্মাণ শেষের দিকে File Photo


দেশে প্রথমবারের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে জলভাগের ওপরে রানওয়ে নির্মিত হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে। এর কাজ শেষের দিকে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সমুদ্রের ওপর নির্মিত রানওয়েতে আন্তর্জাতিক সুপরিসর বিমান ওঠানামা করতে পারবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

নতুন রানওয়ে ও উন্নতমানের এ টার্মিনাল ভবন নির্মাণসহ বর্তমান ৩ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলছে এ বিমানবন্দরে। প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমুদ্রের জলরাশি ভেদ করে রানওয়ের নির্মাণ এ অঞ্চলে এটিই প্রথম। গোটা বিশ্বে হাতেগোনা এ ধরনের রানওয়ে রয়েছে। মালদ্বীপ, কোরিয়া, জাপান, তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুরের বিমানবন্দরের রানওয়ের চেয়েও দীর্ঘ হবে কক্সবাজারের এই রানওয়ে।  

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে সমুদ্রের ওপর ১ হাজার ৭০০ ফুট রানওয়ে নির্মাণের কাজ। মহেশখালী চ্যানেলের দিকে এ বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১০ হাজার ৭০০ ফুট। এর পরের অবস্থান হবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের; যার দৈর্ঘ্য ১০ হাজার ৫০০ ফুট। কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণের এ প্রকল্পের কাজ এরই মধ্যে প্রায় ৭৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা।

এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক বেবিচকের নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) ইউনুছ ভূঁইয়া সমকালকে জানান, পৃথিবীর উপকূলীয় শহরে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে অন্যতম হবে এই বিমানবন্দর। সমুদ্রের ভেতরেই থাকবে ১ হাজার ৩০০ ফুট। সমুদ্রের নীলাভ জলরাশি ভেদ করে অবতরণ করবে এ-৩৮০-এর মতো বিশালাকৃতির উড়োজাহাজ। বিশ্বের উন্নত দেশের আদলেই বিমানবন্দর গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বেবিচক।

তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০২১ সালে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে বেবিচক। এই কোম্পানি চীনের আরেক প্রকৌশল কোম্পানি চাংজিয়াং ইচাং ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরোকে সঙ্গে নিয়ে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে কাজ শুরু করছে। এর আগে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ছিল ৯ হাজার ফুট। 

বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মালেক বলেন, ২০১২ সালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে সম্প্রসারণ করে ৯ হাজার ফুট করা হয়। সে সময় প্রস্থ ১২০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ২০০ ফুট  করা হয়। ওই প্রকল্পের আওতায় রানওয়ের লোড ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছিল। পাশাপাশি আলোরও ব্যবস্থা করা হয়। নতুন করে রানওয়ে বিস্তৃত করা নির্মাণ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার পথ প্রশস্ত করবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান সমকালকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। বর্তমান প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে এ বিমানবন্দরে। 

১৯৫৬ সালে অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হিসেবে কক্সবাজার বিমানবন্দর যাত্রা শুরু করে। ১৯৭১ সালে মুত্তিযুদ্ধের সময় এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পরে সংস্কার করে আবার সচল করা হয়। এর পর ধাপে ধাপে কক্সবাজার বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন করা হয়েছে।