বরেণ্য লেখক-গবেষক, শিশু-কিশোর আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব শহিদজায়া অধ্যাপক পান্না কায়সারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকালে প্রধানমন্ত্রী এ শোক জানান।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
পান্না কায়সার শহিদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের সহধর্মিণী এবং অভিনেত্রী শমী কায়সারের মা। ১৯৫০ সালের ২৫ মে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর আরেক নাম সাইফুন্নাহার চৌধুরী।
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা’র স্লোগানে পরিচালিত শিশু কিশোরদের সংগঠন খেলাঘর নিয়ে আজীবন সক্রিয় ছিলেন তিনি। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
পান্না কায়সার বাংলাদেশের মানুষের কাছে এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। ১৯৬৯ সালে শহীদুল্লা কায়সারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। এর অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি স্বামীকে হারান। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আলবদর বাহিনীর কিছু সদস্য শহীদুল্লা কায়সারকে তাঁর ২৯ বি কে গাঙ্গুলী লেনের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তিনি আর ফিরে আসেননি। স্বামীকে হারিয়ে পাগল পারা হয়ে যান পান্না কায়সার। অসংখ্য লাশের মাঝে খুঁজে বেড়িয়েছেন প্রিয় স্বামীকে। কিন্তু তার কোনো হদিস পাননি।
এরপর ছোট্ট দু’সন্তানকে নিয়ে পাড়ি দেন দীর্ঘপথ। যে পথটি ছিল তার অজানা। শপথ নেন বধ্যভূমির তীরে দাঁড়িয়ে। আজীবন চলবেন স্বামীর দেখানো পথে। তাই নানা ঝড়ে আক্রান্ত হলেও কখনো দমে যাননি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে শুরু করেন নতুন সংগ্রাম। যুক্ত হন রাজনীতির সঙ্গে। ১৯৯৬-২০০১ সালের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের হয়ে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হন। পেশা হিসেবে বেছে নেন শিক্ষকতাকে।