হিজাব পরে কয়েকজন ছাত্রীকে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেয়ার ঘটনায় আপত্তি জানানোয় এক মুসলিম ছাত্রকে মারধর করেছে ভারতের ত্রিপুরার একটি ডানপন্থি সংগঠনের সদস্যরা।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) মারধরের এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রকে টেনেহিঁচড়ে স্কুলের সামনে নিয়ে মারধর করা হয়। এসময় স্কুলটির প্রধান শিক্ষকসহ অন্য কোনো শিক্ষকই ওই শিক্ষার্থীকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেননি।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, প্রতিবাদে সড়কও অবরোধ করেছেন তারা। হামলাকারীরা বহিরাগত ছিল এবং কোনোভাবেই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে ওই ঘটনার পর থেকে সেপাহিজলা জেলার বিশালগড় মহকুমা এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এক সপ্তাহ আগে একটি ডানপন্থি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত দাবি করা স্কুলের সাবেক একদল ছাত্র স্কুলে আসে। এসময় তারা স্কুল প্রাঙ্গনে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরার অনুমতি দেয়ার বিষয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করে এবং হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা দিতে প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ জানায়।
কারাইমুরা নামের স্কুলটি সরকারি সহায়তায় পরিচালিত। এনডিটিভি জানায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রিয়াতোস নন্দীর সঙ্গে সাবেক শিক্ষার্থীদের যে দলটি দেখা করেছিল, তারা সবাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে যুক্ত।
তবে এ ধরনের নিয়ম সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর থেকে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায়, প্রধান শিক্ষক মৌখিকভাবে শিক্ষার্থীদের স্কুলে হিজাব না পরার নির্দেশনা দেন।
স্থানীয় পুলিশের দাবি, এটি কোনো সাম্প্রদায়িক সমস্যা নয়। এ ঘটনায় একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, ওই ছাত্রকে মারধরের ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্লাসও স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে রাজ্য কর্তৃপক্ষ।