২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১০:৫৬:৫৬ অপরাহ্ন


জাহাজের রাডারে বসে ১৪ দিন সাগরে ভেসেছিলেন ৪ নাইজেরীয়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৮-২০২৩
জাহাজের রাডারে বসে ১৪ দিন সাগরে ভেসেছিলেন ৪ নাইজেরীয় জাহাজের রাডারে বসে পাঁচ হাজার ছয়শো কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন চার নাইজেরীয়। ছবি: রয়টার্স


আটলান্টিক মহাসাগরে ১৪ দিন ধরে জাহাজের রাডার বা হালের ওপরের একটি ছোট্ট জায়গায় আশ্রয় নেয়ার ১৪ দিন পর উদ্ধার হয়েছেন চার নাইজেরীয়।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
 
উত্তাল আটলান্টিক মহাসাগরে বিশাল মালবাহী জাহাজের রাডারে বসে পাড়ি দিয়েছেন পাঁচ হাজার ছয়শো কিলোমিটার পথ। ১৪ দিন পর ভিটোরিয়ার দক্ষিণ পূর্ব বন্দরে ব্রাজিলের ফেডারেল পুলিশ তাদের উদ্ধার করেন। এসময় সমুদ্র পথে রাডারে ১৪ দিনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানান তারা।
 
জাহাজের রাডারের ওপরের ছোট্ট একটি জায়গায় বসে উন্নত জীবনের আশায় বুক বেধে থাকা নাইজেরিয়ার এই চার অভিবাসন প্রত্যাশী আটলান্টিকের বুকে যাত্রা শুরু করেন। ১০ দিনের মাথায় খাবার ও পানি ফুরিয়ে যায়। এরপর বাকি চার দিন বেঁচেছিলেন সমুদ্রের লবণাক্ত পানি পান করে।
 
সাউ পাওলোর এক গির্জায় আশ্রয়ে থাকা উদ্ধার পাওয়াদের একজন থ্যাঙ্কগড ওপেমিপো ম্যাথিউ ইয়ে (৩৮) বলেন, এটি আমরা জন্য একটি ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। এটা সহজ ছিল না। আমি আতঙ্কে কাঁপছিলাম। কিন্তু আমি এখানে।
 
নাইজেরিয়ান এ চার নাগরিক জানান, জাহাজের নিচে হালের ওপরের খুপড়িতে চড়ে ইউরোপে পৌঁছানোর আশা করলেও ব্রাজিলে পৌঁছে হতভম্ব হয়ে গেছেন তারা।
 
অর্থনৈতিক দুরবস্থা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অপরাধের কারণে তারা নিরূপায় হয়ে নাইজেরিয়া ছেড়েছেন বলেও জানান। উন্নত জীবনের আশায় ভয়ঙ্কর এ পথ বেছে নেন তারা।
 
এই চারজনের মধ্যে দুজনকে তাদের অনুরোধের ভিত্তিতে নাইজেরিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অপর দুজন নাইজেরিয়ার বাইয়েলসা রাজ্য থেকে আসা রোমান এবিমেনে ফ্রাইডে (৩৫) ও লাগোস রাজ্যের ইয়ে ব্রাজিলে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন।
 
ফ্রাইডে বলেন, ‘ব্রাজিলের সরকার আমার প্রতি সদয় হবে এই প্রার্থনা করছি আমি।’
 
ইয়ে জানান, তার চিনাবাদাম ও পাম তেলের বাগান এ বছরের বন্যায় ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর পরিবারসহ তিনি গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। 
 
ফ্রাইডে বলেন, পানিতে পড়ে না যান তার জন্য জাহাজের হালের চারপাশে একটি জাল পেঁচিয়ে নিজেদের একটি দড়ি দিয়ে সেটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। নিচে পানিতে তাকিয়ে তিনি প্রায়ই 'তিমি ও হাঙ্গরের মতো বড় মাছ' দেখেছেন বলে জানান তিনি।
 
জায়গা ছোট হওয়ায় এবং জাহাজের ইঞ্জিনের শব্দে এই ১৪ দিন ঘুমাতে পারেননি বলে চার অভিবাসী প্রত্যাশী জানিয়েছে।